ঢাকা: বৃহস্পতিবার চলছে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট। তৃতীয়বারের মত নির্বাচিত হওয়ার জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে।
এবারের নির্বাচনে তার মূল প্রতিপক্ষ তারই এক সময়ের সহযোগী ও সাবেক মন্ত্রী মাইত্রিপালা সিরিসেনা। তবে পর্যবেক্ষকদের ধারণা এই নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
২০০৯ সালে ২৬ বছরের পুরানো গৃহযুদ্ধের সফল পরাসমাপ্তি ঘটিয়ে শ্রীলংকার সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রাজাপাকসে।
পুরস্কার হিসেবে ২০১০ সালে তামিল বিরোধী যুদ্ধে জয়লাভের নায়ক সাবেক সেনাপ্রধান শরৎ ফনসেকাকে হারিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দমন পীড়ন চালানোর কারণে ব্যাপক সমালোচিত হন রাজাপাকসে।
২০০৯ সালে তামিল বিদ্রোহীদের দমনের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধের সফল পরিসমাপ্তি ঘটানোয় দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সিংহলি নাগরিকের সমর্থন লাভ করেন তিনি।
এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এবং যুদ্ধোত্তর অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংবিধান সংশোধন করেন রাজাপাকসে। তবে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা পড়েছে।
দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ পদেই নিজের আত্মীয় স্বজনদের বসিয়েছেন তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ শ্রীলংকাকে পারিবারিক ব্যবসার মতো পরিচালিত করছেন রাজাপাকসে।
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন সিংহলি জনগণের অনেকেই সিরিসেনার জোটের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন, যারা এর আগে সাধারণত রাজাপাকসেকে ভোট দিতেন।
এছাড়া শ্রীলংকার ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটারের সমর্থনও সিরিসেনার ঝুলিতে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সংখ্যালঘু ভোটারের বেশিরভাগই তামিল এবং মুসলিম।
এবারের নির্বাচনেও সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় এক ৠালিতে বুধবার (০৭ জানুয়ারি) বিরোধী পক্ষের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এছাড়া তামিল অধ্যুষিত এলাকায় সংঘর্ষেরও আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানান, তামিল ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে তামিল অধ্যুষিত এলাকায় সেনা মোতায়েনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তারা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (০৮ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ফল ঘোষণা করা হবে শুক্রবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫