কেরাটোকোনাস নামে রোগে আক্রান্ত হয়ে অমিত প্যাটেল পাঁচ বছর আগে তার চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। তিনি বলেন, এই (লন্ডন) শহর আমার জন্য একটা ভীতিকর জায়গা।
অমিত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্যামেরায় যেসব ফুটেজ ধারণ করা হয়েছে। এতে আপনি দেখতে পাবেন- শহরের মানুষজন সবসময় আপনাকে সাহায্য করে না।
ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ সবার সামনে আসা দরকার বলে উল্লেখ করে অমিত বলেন, রাস্তায় চলতে গিয়ে আমার পোষা কুকুর কিকাকে অনেকেই তাদের ব্যাগ দিয়ে মেরেছে। একদিন এক ভদ্রমহিলা আমাকে থামিয়ে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে বলেন। এটা আমার জন্য ভীষণ বেদনাদায়ক ছিলো।
কুকুরের সঙ্গে ক্যামেরা লাগিয়ে পথ চলার বুদ্ধিটা বাতলে দিয়েছিলেন আমিতের সাবেক চিকিৎসক। তারপর থেকে তিনি এই কাজ করছেন। রাস্তায় চলার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমিতের গোটা দিনের পরিস্থিতি জানতে পারেন তার স্ত্রী সীমা। অমিতকে উল্লেখযোগ্য ঘটনার বর্ণনাও করেন সীমা।
অমিত প্যাটেল কষ্টের সঙ্গে জানান, লন্ডন রেলস্টেশনে একবার জরুরি অবস্থায় আমি সবার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে ক্যামেরায় ধরা পড়ে সে সময় আমার আশপাশে অনেকেই ছিল। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। এরপর এক রেলকর্মী আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসে প্রথমেই জানালেন তিনি আমাকে দেখেননি। এ ঘটনা সত্যিই আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল।
পরে ওই দিনের ঘটনার ফুটেজ তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ জানানোর জন্য ভিডিওটি যথাযথ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রেল স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
মানুষের জীবনাচারণ নিরবে পর্যবেক্ষণ এবং জীবন চলার অভিনব অভিজ্ঞতা সমাজে টিকে থাকার এই লড়াইয়ে অন্ধ অমিতকে ভিন্নরকম এক উপলব্ধির জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭
আরআর/টিআই