বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেলে মেট্রোপলিটন পুলিশের তরফ থেকে এ পরিচয় প্রকাশ করা হয়। গত বুধবার (২২ মার্চ) বিকেল পৌনে ৩টার দিকের ওই ‘সন্ত্রাসী ঘটনায়’ মোট চারজন নিহত হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করে বলা হয়, খালিদ মাসুদ বর্তমানে কোনো পুলিশ তদন্তের মধ্যে নেই। তবে ২০০৩ সালের একটি ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত ছিলেন। অভিযুক্ত ছিলেন ১৯৮৩ সালের অপর একটি সন্ত্রাসী ঘটনায়ও। দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্ট কাউন্টিতে জন্ম নিলেও তিনি বসবাস করছিলেন ওয়েস্ট মিডল্যান্ড কাউন্টিতে।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, মাসুদ এ ধরনের হামলা করবেন বলে প্রাথমিক কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না। তবে ১৯৮৩ ও ২০০৩ সালের ওই হামলাগুলোর ঘটনায় তিনি আগে থেকেই গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৫ সহ নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে চিহ্নিত ছিলেন।
ওই হামলার দায় স্বীকার করে ঘণ্টাকয়েক আগেই বিবৃতি দেয় ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা বলে, লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে তাদেরই এক যোদ্ধা এই রক্তাক্ত হামলা চালিয়েছে।
ওই ‘সন্ত্রাসী ঘটনায়’ জড়িত সন্দেহে এরইমধ্যে আট জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে-ও হামলাকারী জন্মসূত্রেই ব্রিটিশ বলে জানান।
সকালে এ নিয়ে ব্রিফিংয়ে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হেড মার্ক রাওলি বলেন, বার্মিংহাম, লন্ডনসহ দেশের সব স্থানে এ ঘটনার তদন্ত চলছে। আমাদের এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে হামলাকারী একলা ছিল, তবে সে আন্তর্জাতিক কোনো সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ ছিল। পরবর্তী কোনো ঝুঁকির তথ্য আমাদের কাছে নেই।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ওই ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন জাতীয়তার মানুষ রয়েছেন বলে তাদের পরিচয় প্রকাশ করছেন না তারা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, হামলাকারী প্রথমে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে পথচারীদের ওপর তার চার চাকার প্রাইভেট গাড়ি চালিয়ে দেয়। এরপর গাড়ি থেকে ছুটে গিয়ে ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেসের সামনে দায়িত্ব পালনকারী ওই পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে। তারপর সে পার্লামেন্টে এমপিদের প্রবেশের পথ দিয়ে ছুরি নিয়ে ভেতরে ছুটে যেতে চাইলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাকে দু’টি গুলি করেন। ওদিকে তার ছুরিকাঘাত ও গাড়ির চাপায় কাতরাতে থাকেন পুলিশ ও পিষ্ট হওয়া পথচারীরা। তবে কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলে মারা যান পুলিশ সদস্য। তৎক্ষণাৎ হামলাকারী এবং অন্যদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে হামলাকারীসহ তিন জনের মৃত্যুর খবর দেন চিকিৎসকরা।
যদিও পরে হাসপাতালে চার জনের মৃত্যুর খবর বলা হয়েছিল, কিন্তু এখন আবার এ সংখ্যা কমিয়ে তিন বলছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
হামলায় ৪০ জন আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে সকালে। এদের মধ্যে বেশ ক’জনের জাতীয়তা জানা গেছে। রয়েছেন ১২ জন ব্রিটিশ, ৪ জন দক্ষিণ কোরিয়ান, ৩ জন ফরাসি, ২ জন রোমানিয়ান, ২ জন গ্রিক, ১ জন করে আমেরিকান, পোলিশ, আইরিশ, চাইনিজ, ইতালিয়ান ও জার্মান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭/আপডেট ২২২২ ঘণ্টা
এইচএ/
আরও পড়ুন
** লন্ডনে হামলার ‘দায় স্বীকার’ আইএসের
** ওয়েস্টমিনস্টারে হামলাকারী ‘ব্রিটিশ’, চিহ্নিত এমআই৫’র
** লন্ডন হামলায় ৭ সন্দেহভাজন আটক
** লন্ডন হামলায় নিহতের সংখ্যা কমিয়ে ৩ বলছে পুলিশ
** লন্ডন হামলায় সংসদ সদস্যের বীরত্ব
** টেরিজা মে’কে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস ট্রাম্পের
** ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ৪০
** ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে হামলায় নিহত ৪, আহত ২০