তার আইনজীবী ফরিদ আল-দীবের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর দিচ্ছে। ‘আরব বসন্ত’র সময় ২০১১ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডসহ বিরোধীদের গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হন স্বৈরশাসক মোবারক।
মিশরের সংবাদমাধ্যম জানায়, মোবারকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালত ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া পুনরায় শুরুর নির্দেশ দেন। কয়েক বছরের বিচারপ্রক্রিয়া শেষে চলতি মাসের শুরুতে সাবেক প্রেসিডেন্টকে খালাস দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর কারাগারের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুক্রবার তিনি সামরিক হাসপাতাল (কারাবন্দি দশা) থেকে মুক্তি পান বলে জানান তার আইনজীবী ফরিদ।
২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১৮ দিনব্যাপী গণঅভ্যুত্থানকালে প্রায় সাড়ে ৮৫০ মানুষ নিহত হয়। নির্বিচারে এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলা ছাড়াও মোবারকের বিরুদ্ধে ছিল দুর্নীতির অভিযোগেও একাধিক মামলা।
মোবারকের ক্ষমতাচ্যুতির পর ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসে কট্টরপন্থি মুসলিম ব্রাদারহুড। এই ব্রাদারহুডেরই আমলে মূলত ওই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মোবারকের। কিন্তু ব্রাদারহুডের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিও বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতে পারেননি। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর কারাবন্দি করে। ক্ষমতা নেন সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি।
পরে মুরসির আমলে মোবারকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর পুনর্বিচার শুরু হয়। এর মধ্যে একটি দুর্নীতি মামলায় মোবারক এবং তার দুই ছেলে আলা ও জামালের তিন বছর করে কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়। তাদের কারান্তরীণ থাকার সময় দণ্ডাদেশের সমান হয়ে যাওয়ায় দুই ছেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু হত্যা মামলায় বিচার চলতে থাকে মোবারকের। বাকি মামলাগুলোরও নিষ্পত্তি হয়ে যায় এভাবে। শেষ পর্যন্ত হত্যা মামলায় মার্চের শুরুতে তাকে খালাস দিয়ে দেন আদালত।
১৯৮১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত নিহত হওয়ার পর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেন মোবারক। তারপর থেকে তিন দশক লোহিত সাগর তীরের মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও পর্যটন সমৃদ্ধ দেশটি শাসন করেন এই সেনাবাহিনীর এই সাবেক কর্তা। মোবারকের বয়স ৮৮ বছর।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৭
এইচএ/