নয়াদিল্লির আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) এ স্থগিতাদেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে কুলভূষণের সঙ্গে তার পরিবারসহ সরকারের লোকদের দেখা করার সুযোগসহ প্রাপ্য যাবতীয় সুবিধা যেন তাকে দেওয়া হয় সেটিও নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার (১৫ মে) কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে আবেদন করে নয়াদিল্লি। আবেদনে তারা কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার কথা বলে আদালতকে।
বুধবার বিচারক রনি আব্রাহামের নেতৃত্বাধীন আদালত রায় ঘোষণায় বলেন, আগামী আগস্টে এই আদালতে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না। তাকে কনস্যুলার অ্যাকসেস (কূটনেতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্বজন ও সরকারের লোকদের দেখা করার সুযোগ) দিতে হবে।
পাকিস্তানের সম্ভাব্য আপত্তির বিষয়টি মাথায় রেখে আদালত জানান, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কুলভূষণ যাদবের মামলায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার আন্তর্জাতিক আদালতের রয়েছে। অন্যথা হলে সেটি ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন হবে।
গত বছরের মার্চে বেলুচিস্তানে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হন কুলভূষণ। ইসলামাবাদের তরফ থেকে দাবি করা হয়, তিনি জিজ্ঞাসাবাদে ভারতের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সদস্য হিসেবে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এজন্য গত মাসে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এরমধ্যে তার ফাঁসির প্রক্রিয়াও শুরু হয়।
কিন্তু ভারত বরাবরই বলে আসছে, কুলভূষণ ভারতের নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা। তিনি ইরান থেকে অপহৃত হয়েছিলেন। তারপর থেকে কুলভূষণকে পাওয়া যাচ্ছিল না।
১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালসহ কয়েক দফায় সংঘাতে জড়ানো ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে গত দু’বছর ধরেও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। এরমধ্যে শেষ দু’দিন আগেও পাকিস্তানের হামলায় দুই ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি নয়াদিল্লির।
এই উত্তেজনায় ভারতের তরফ থেকে বরাবরই কূটনৈতিক সমাধানের প্রস্তাব দিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু কূটনৈতিক সংলাপ শুরু হওয়ার আগে পাকিস্তান সীমান্তে আবার রক্তক্ষয় হলে সে অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় নয়াদিল্লি। ভারত মনে করে, কুলভূষণকে ‘গুপ্তচর’ সাজিয়ে পাকিস্তান এই বিরোধে নিজেদের বিজয়ী দেখতে চাইছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালতের এ আদেশে ভারতেরই জয় হলো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৭
এইচএ/