অবশ্য ভোটগ্রহণ শেষেই বুথফেরত জরিপে মেরকেলে জয়ের ব্যাপারে আভাস দিয়েছিল। সেটা পুরোপুরি সত্য হলো চূড়ান্ত।
এছাড়া অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পেয়েছে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। উদারপন্থি এফডিপি পেয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট, পরিবেশবাদী গ্রিন পার্টি পেয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট, আর বাম দল পেয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) সারাদেশে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা (বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা) পর্যন্ত।
এবারের নির্বাচনে মোট ৬৫টি দল অংশ নিয়েছে। দেশটিতে প্রায় ৬ কোটি ১০ লাখ ভোটার তাদের অধিকার প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে নারী ভোটার প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ, আর পুরুষ প্রায় ৩ কোটি।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিজন ভোটার দু’টি করে ভোট দিয়েছেন। একটি সংসদীয় আসনের প্রার্থীকে, অপরটি দলকে। জার্মানিতে কোনো দল মোট ভোটের ৫ শতাংশ না পেলে সেই দল সংসদে (বুন্দেসতাগ) প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। বুন্দেসতাগের মোট ৫৯৮ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে রোববার সরাসরি নির্বাচন হয়েছে। বাকি ২৯৯ আসনে দলীয় ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন দলের প্রার্থী তালিকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সমর্থকদের উদ্দেশে তাৎক্ষণিক দেওয়া ভাষণে মেরকেল বলেন, আরও ভালো ফল করার আশা করেছিলাম। এএফডি পার্টির উত্থানে জনগণের ‘ভয়, উদ্বেগে’র কথা শোনা হবে।
সংসদে এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখলেও গত ৭০ বছরের মধ্যে এটাই খ্রিস্টান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ/সিএসইউ) সবচেয়ে খারাপ ফলাফল।
এক নজরে ইউরোপের নেত্রী মেরকেল
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক মেরকেলের রাজনীতিতে পদার্পণ ৩৪ বছর বয়সে। ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের সময় পূর্ব জার্মানির প্রধানমন্ত্রী লোথার ডে-মেসিয়ারের রাজনৈতিক সচিব হিসেবে রাজনীতির মঞ্চে আসেন মেরকেল। এরপর তিনি বৃহত্তর জার্মানির প্রথম নির্বাচনে বুন্দেসতাগের সদস্য নির্বাচিত হলে তাকে মন্ত্রী করে নেন তৎকালীন চ্যান্সেলর হেলমুট কোল। ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে কোলের নেতৃত্বে সিডিইউ’র ভরাডুবি হলে নেতৃত্বে আসেন ৪৪ বছর বয়সী মেরকেল।
দলকে গুছিয়ে নেওয়ার পর ২০০৫ সালে প্রথম জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হন মেরকেল। তারপর থেকে কেবল জার্মানিই নয়, পুরো ইউরোপকেই যেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। জার্মানির ‘ইউরো-সংশয়বাদী’দের তিনি যেমন সন্তুষ্ট করেছেন বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে, তেমনি ‘ইউরোপ-বান্ধব’দেরও খুশি করেছেন দলের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ সত্ত্বেও সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে।
ইউরোপ অভিমুখে অভিবাসী-শরণার্থী স্রোত, ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট, জার্মানির রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা নজরদারিসহ নানা ইস্যুতে মেরকেল মাঝেমধ্যে বেকায়দায় পড়লেও ধীরে-সুস্থে জনগণের মন-মর্জি বুঝে পদক্ষেপ নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন পূর্ণোদ্যমে। গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স এমনকি যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করলেও মেরকেলের দৃঢ় ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই জার্মানিকে পড়তে হয়নি তেমন কোনো সংকটে।
**চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর মেরকেল, বলছে বুথফেরত জরিপ
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এসএইচ