রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। তবে কী পদ্ধতিতে তাদের ফেরত নেওয়া হবে এ বিষয়ে সু চি কোনো সদুত্তর দেননি।
এদিকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন এখনও চলমান বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। এছাড়া এখনও এক লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসার অপেক্ষায় বলেও উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
সু চি যেদিন এ কথা বললেন, সেদিনই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আবারও নির্ভেজাল মিথ্যাচার করেছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তার নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের তোলা রোহিঙ্গাবিরোধী ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞের’ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে হ্লাইং ধৃষ্ঠতা ও ঔদ্ধত্যের স্বরে বলেছেন, রোহিঙ্গা ‘পলায়নের’ যে খবর আসছে, তা অতিরঞ্জিত। আর রোহিঙ্গারাই ‘অবৈধ বাঙালি’।
তাদের এমন মন্তব্যের মধ্যে দক্ষিণ রাখাইনে রোহিঙ্গা বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ চলমান। সেখান থেকে নতুন করে বাংলাদেশে মানুষের ঢল নামতে পারে।
তবে সু চি আশার বাণী শুনিয়ে টেলিভিশন বক্তব্যে বলেছেন, যারা বাংলাদেশ থেকে ফিরবেন তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের উন্নতিতে তার সরকার কাজ করবে, এতে সেখানে টেকসই শান্তি অর্জন হবে বলেও মত তার। রোহিঙ্গাদের বের করে দেওয়া হলেও এ জন্য তিনি ‘একতার’ কথা উল্লেখ করেছেন।
রাখাইনে মানবিক সাহায্য, পুনর্বাসন ও উন্নয়নের জন্য ‘ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে করে সেখানে স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে বলে মনে করেন নোবেল জয়ী এই নেত্রী।
দীর্ঘ আলোচনায় সু চি এবারও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দের ব্যবহার ঘটাননি। এ ইস্যুতে বরাবরই তিনি এভাবেই কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বলছে, গত ২৪ আগস্টের পর থেকে সহিংসতার জেরে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সোয়া পাঁচ লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। দিন দিন রোহিঙ্গা স্রোত কোনো মতেই থামছে না। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই। কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল সেখানে কাজ করার সুযোগ না পাওয়ায় নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭/আপডেট ১২১৬ ঘণ্টা
আইএ