বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) শেষ হয়েছে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয়ের বেঁধে দেওয়া ওই আল্টিমেটাম। ১ অক্টোবরের গণভোটের পর ১০ অক্টোবর কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমন্ত ‘স্থগিত স্বাধীনতা’ ঘোষণা দিয়ে সংলাপের আহ্বান জানালে কয়েক ঘণ্টা পর রাজয় বিষয়টি স্পষ্ট করতে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।
এই অবস্থায় স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম বলছে, আল্টিমেটাম পেরিয়ে যাওয়ায় কাতালোনিয়ার ওপর মাদ্রিদের সরাসরি সরকার পরিচালনার আভাস মিলছে। কিন্তু পুজদেমন্তের সংলাপে বসার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে রাজয়ের সরকার এমন পদক্ষেপে গেলে কাতালোনিয়া ‘স্থগিত স্বাধীনতা’ কার্যকরের পাল্টা ঘোষণা দিতে পারে। আর এটা কাতালোনিয়াকে ঠেলে দিতে পারে অস্থিরতায়।
অবশ্য, আঞ্চলিক শক্তিগুলো মাদ্রিদের পক্ষেই আছে। এরইমধ্যে ফ্রান্স-ইতালিসহ কয়েকটি দেশ বলে দিয়েছে, সংবিধানবহির্ভূতভাবে স্পেন ভাঙনের পক্ষে তারা নেই। পাশাপাশি তারা কাতালোনিয়া ও মাদ্রিদের নেতৃত্বকে সংলাপে বসারও আহ্বান জানিয়েছে।
স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী প্রায় ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটারের কাতালোনিয়ায় রয়েছে ৭৫ লাখ মানুষের বসবাস, যা স্পেনের মোট জনগণের ১৬ শতাংশ। স্পেন থেকে যা রফতানি হয়, তার ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ রফতানি হয় এই অঞ্চল থেকে। স্প্যানিশ জিডিপিতে কাতালোনিয়ার অবদান ১৯ শতাংশ। স্পেনে বিদেশি বিনিয়োগের ২০ দশমিক ৭ শতাংশ যায় এই অঞ্চলে।
নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির কাতালানরা সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ভোগ করলেও সাংবিধানিকভাবে পৃথক রাষ্ট্র হতে চায়। এখানকার আঞ্চলিক সরকার গত প্রায় পাঁচ বছর ধরেই আলাদা রাষ্ট্র গঠনের চাপ হজম করছে জনগণের। ২০১৫ সালের আঞ্চলিক নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দল বিজয়ী হলে এই চাপ আরও স্পষ্ট হয়।
তবে স্বাধীনতার দাবিতে কাতালানরা সরব হওয়ার পর থেকেই বিরোধিতা করে আসছে স্প্যানিশরা। এই বিরোধিতার মধ্যেই ২০১৪ সালে কাতালানরা পরীক্ষামূলক গণভোট করলে তার ফলাফলকে উড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী রাজয়। তিনি সেসময় বৈধ উপায়ে গণভোট আয়োজনের আবদারও না মানার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত গণভোটের পর এখন মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার তৎপরতার দিকেই নজর ইউরোপসহ বিশ্ববাসীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৭
এইচএ/
‘আল্টিমেটাম’ পাত্তা দিলেন না কাতালান প্রেসিডেন্ট