রোববার সকাল ৭টায় একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হবে জাপানজুড়ে। ভোটগ্রহণ শেষ হবে রাত ৮টায়।
২০১২ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভের পর এ নিয়ে দুই দফায় আগাম নির্বাচন ডাকলেন আবে। এর আগে ২০১৪ সালেও আগাম নির্বাচন ডাকেন তিনি। সেবার অর্থনৈতিক সংস্কারে তার পদক্ষেপ জনগণ সমর্থন করছে কি-না, তা যাচাই করতে নির্বাচন ডাকেন। ফলও পেয়ে যান আবে। আগের নির্বাচনের চেয়ে অনেক বেশি আসন জিতে যায় তার দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
এবারও সংসদের মেয়াদ পূরণের এক বছর আগে একই উদ্দেশে আগাম নির্বাচন ডাকলেন এলডিপি প্রধান।
এ বিষয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রীর ‘আবেনোমিকস’ (আবে+ইকোনমিকস) বা ‘আবেতত্ত্ব’ দেশকে এগিয়ে দেবে বলে এলডিপির পক্ষ থেকে বিগত নির্বাচনে প্রচারণা চালানো হলেও ভ্যাট ও সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় এ বছর জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী হয়ে পড়ে আবের। এরমধ্যে উত্তর কোরিয়ার ছোড়া দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে সাগরে পড়ায় এ উত্তেজনা নিরসনে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনবোধ করছেন আবে। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়েই তিনি নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে আগাম নির্বাচন ডেকেছেন।
কিছু বিশ্লেষক অবশ্য বলছেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে আবের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়লেও উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তার জনসমর্থন আবারও বেড়ে যায়। একটি জরিপ মতে, জুলাইয়ে আবের জনসমর্থন যেখানে ছিল ৩০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ শতাংশের বেশি। আবার প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (ডিপি) সম্প্রতি ভাঙন দেখা দেয়। নিজের বেড়ে যাওয়া জনসমর্থন ও বিরোধী দলের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে সংসদে নিজের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতেই এ নির্বাচন ডেকেছেন আবে।
দেশটির জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘নিক্কি’র চালানো এক জনমত জরিপে দেখা যায়, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছে আবের নেতৃত্বাধীন এলডিপি। জরিপ অনুযায়ীই ফল আশা করছে এলডিপির নেতৃত্বও।
আভাস অনুযায়ী, এ নির্বাচনে আবের দলের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে টোকিও সিটির প্রথম নারী গভর্নর ইউরিকো কোইক’র নেতৃত্বাধীন আলোচিত নতুন দল কিবো নো তো’র (পার্টি অব হোপ) সঙ্গে। কোইক একসময় এলডিপিতেই ছিলেন। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে মতবিরোধে তিনি আবের দল ত্যাগ করেন। কাগজে-কলমে প্রধান বিরোধী দল বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টির (ডিপি) নেতৃত্বাধীন জোটও লড়াইয়ে আছে।
সরকার পরিচালনার জন্য সংসদের (ডায়েট) ৪৬৫ আসনবিশিষ্ট নিম্নকক্ষ জনপ্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) নির্বাচনে জিততে হয়। বরাবরের মতোই নির্বাচনে সরাসরি ভোট হবে ২৮৯ আসনে। বাকি ১৭৬ আসনে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে। ক্ষমতায় যেতে হলে পেতে হবে অন্তত ২৩৩টি আসন।
বিগত নির্বাচনে আবের এলডিপি জোট সরাসরি ভোটের ২৮৯ আসনের মধ্যে পেয়েছিল ২৩২ আসন। আর সবমিলিয়ে পেয়েছিল ৩২৬ আসন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
এইচএ