ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা চান মার্কিন আইনপ্রণেতারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৭
মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা চান মার্কিন আইনপ্রণেতারা পুরো রাখাইনে আগুন জ্বালিয়েছে তাদের সেনাবাহিনী, ছবি: বাংলানিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনিয়র আইনপ্রণেতারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) তারা সিনেটে একটি বিল উত্থাপন করেন। এমন সময় এই বিষয়ে তারা কথা বললেন যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রায় দশদিনের এশিয়া সফর শুরু করেছেন।

বিলে নিষেধাজ্ঞার পক্ষে কথা বলেন মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটির চেয়ারম্যান, রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন এবং ডেমোক্র্যাট সিনেটর বেন কার্ডিন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অব্যাহত নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তারা। উত্থাপিত এই বিলে সেনাবাহিনীর সিনিয়র সদস্যদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে অন্তত ৪৩ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে। এ বিষয়টি নিয়ে মাসখানেক থেকেই কথা হচ্ছে।

রাখাইনে অবাধে ত্রাণ পৌঁছানোর আহ্বান ইউএনএইচসিআর’র

এদিকে এই প্রথম ট্রাম্প এশিয়ার দেশগুলো সফরে বেরিয়েছেন। যাবেন চীনেও। এশিয়ার প্রধান অর্থনৈতিক এই দেশটির সঙ্গে তার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন আগামী ১৫ নভেম্বর মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। দেশটিতে এটিই হবে তার প্রথম সফর। ট্রাম্পের সঙ্গে এশিয়া সফর শেষে সেখানে যাবেন তিনি। কথা বলবেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে। সফরে টিলারসন মিয়ানমারের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।  রোহিঙ্গাদের ফেরার দাবি নিয়ে মিয়ানমার যাচ্ছেন টিলারসন

মিয়ানমার সেনাপ্রধানকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেন টিলারসন
রোহিঙ্গাদের হত্যা-নির্যাতন 'অগ্রহণযোগ্য', বললেন টিলারসন
রোহিঙ্গা নিধনের দায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর: টিলারসন

চলতি বছরের ২৪ আগস্টের পর থেকে অব্যাহত অত্যাচারে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখের বেশি বলে জাতিসংঘ জানাচ্ছে। বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও লাখ খানেক বেশি। এছাড়া আগে থেকেই চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে থাকেন। এতে মোট রোহিঙ্গা সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট। সে রাতে রাখাইনে পুলিশ ক্যাম্প ও সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে নতুন করে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।