নির্ভয়ার বাবা বদ্রিনাথ সিং শুক্রবার (৩ নভেম্বর) নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার ছেলের পাইলট হিসেবে চাকরি পাওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান। বদ্রিনাথ নিজেও রাহুল গান্ধীর সহায়তায়ই এই বিমানবন্দরে চাকরি পেয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সন্তান আজ একজন পাইলট। সে তার প্রশিক্ষণ শেষে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সে যোগ দিয়েছে। প্লেন চালানোও শুরু করেছে। এটা পুরোপুরি সত্য যে, কেবল রাহুল গান্ধীর কারণেই তা সম্ভব হয়েছে। ’
২০১২ সালের ডিসেম্বরে মধ্যরাতে সিনেমা হলে মুভি দেখে বন্ধুর সঙ্গে ফেরার সময় চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণের শিকার হন ২৩ বছর বয়সী ‘নির্ভয়া’। গাড়িটি ব্যস্ত সড়কে কয়েকবার চক্কর দিলেও কোনো নিরাপত্তা বাহিনীই বিষয়টি আঁচ পর্যন্ত করতে পারেনি। ধর্ষকরা তাদের লালসা চরিতার্থ করার পর নির্ভয়ার বন্ধুকে পিটিয়ে দু’জনকে চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে।
১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সিঙ্গাপুরে মারা যান সেই তরুণী। এ নিয়ে পুরো ভারতসহ বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। সেসময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল রাহুল গান্ধীদের দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস।
ঘটনার পর রাহুল নির্ভয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়ালেও এই মানবিক সাহায্যের কথা কাউকে জানাতে বারণ করেন। ছেলে এয়ারলাইন্সে যোগদানের পর বদ্রিনাথ আর লুকিয়ে রাখতে পারলেন না।
নির্ভয়ার বাবা জানান, দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ শেষ করার পর নির্ভয়ার ভাইকে রাহুলের নির্দেশনায় তার মা কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সংসদীয় আসন রায়বরেলীতে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রীয় উড়ান আকাদেমিতে ভর্তি করানো হয়। এরপর তার প্রশিক্ষণের যাবতীয় খরচ বহন করেন রাহুল।
বন্দ্রিনাথ বলেন, রাহুল আমাদের আবেগ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। আজ আমাদের মতো পরিবারের সন্তান পাইলট হতে পেরেছে কেবল তারই কারণে।
ঘটনার পর অনেকেই প্রথমে পাশে দাঁড়ালেও শেষ পর্যন্ত ছায়ার মতো রাহুল গান্ধীই থাকেন জানিয়ে ‘নির্ভয়া’র বাবা বলেন, তিনি এই সহযোগিতার ব্যাপারটি সবার কাছে গোপন রাখতে বলেন। সবসময় বলেছেন, এই বিষয়টি যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রচার না হয়। সেজন্য বরাবরই গণমাধ্যমকে না জানাতে বলেছেন। কিন্তু তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৭
এইচএ/