১৪ বছর বয়সী সামির মুহূর্তেই মাথা ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত উল্টে ফেলতে পারে। যা মাত্র কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় আয়ত্বে আনে সে।
তার ভাষ্য, ‘বয়স তখন ৬ কি ৭। হলিউডের কোনো এক ছবিতে এক অভিনেতাকে মাথা উল্টোতে দেখে আমার মধ্যে বিস্ময় কাজ করে। এরপর আমি তা চেষ্টা করতে শুরু করি। কয়েক মাসেই তা আয়ত্বে এসে যায়’।
সামির বলে, প্রথম প্রথম মা যখন আমাকে এমন করতে দেখতেই তখন চড়-থাপ্পর মারতেন। বলতেন, এমনটি করতে আর যেনো না দেখি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি (মা) বুঝতে লাগলেন, এটি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত।
‘এখন আমার স্বপ্ন হলিউডের ওই অভিনেতার মতো ভৌতিক চরিত্রে কাজ করা’।
বই-খাতা তুলে রেখে সামির এখন একটি নাচের দলের সঙ্গে কাজ করছে। বাবার অসুস্থতার পর পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব এখন সামিরের কাঁধে। সামিরের বাবা সাজিদ খান (৪৯) দুইবার হার্ট স্ট্রোক করে এখন ঘরেই থাকছেন।
সামিরের মা রুখসানা খান (৪৫) বলেন, ওর বাবা একটি টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন। তবে দুইবার হার্ট স্ট্রোক করার পর কাজ করতে পারছেন না। তিনি সুস্থ না হয়ে ওঠা পর্যন্ত সামিরের কাঁধেই পুরো পরিবারের দায়িত্ব। ছেলেটাকে পড়ালেখা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আর কোনো উপায় নেই। হয়তো বিধাতা তার এমনই নিয়তি লিখেছিলেন।
সামির যে নাচের দলে কাজ করে তাতে মোট সদস্য ৮ জন। যারা পুরো করাচি শহরে পারফর্ম করে। প্রতি পারফর্মে তার উপার্জন হয় ৬ থেকে ১০ পাউন্ড। আর প্রতিমাসে একশ’ থেকে একশ’ ২০ পাউন্ড আয় হয় বলে জানায় সামির।
সামির বলে, আমি কঠোর পরিশ্রম করি যেনো, আমার পরিবার ভালোভাবে চলতে পারে। অর্থের অভাবে আমার মতো আমার চারবোনের যেনো পড়ালেখা বন্ধ না হয়ে যায়।
সামির তার ‘বেঁচে’ থাকার এ কৌশল একদিন বড় পর্দায় দেখাতে পারবে বলে বিশ্বাস।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
জেডএস