ক্ষমতাসীন জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্টের (জানু-পিএফ) টুইটার অ্যাকাউন্টে বুধবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে এ কথা বলা হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টটির বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ খবর দিচ্ছে।
সরকারের মধ্যে অস্থিরতায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্ট্যান্টিনো চুইঙ্গা বলেছিলেন, সংকট সমাধানে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে প্রস্তুত। তার বক্তব্যের পর মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাস্তায় নামে সেনাবাহিনীর চারটি ট্যাংক।
এরপর বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় দেখা যায় সেনাটহল। সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, তারা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমসহ বিভিন্ন কার্যালয় দখলে নিয়েছে। তবে এটা কোনো অভ্যুত্থান (ক্যু) নয়। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র টেলিভিশন সম্প্রচারিত ভাষণে বলেন, সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করেনি, কেবল প্রেসিডেন্ট মুগাবের চারপাশের অপরাধীদের সরিয়ে দিচ্ছে। অভিযান শেষ হলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
কিন্তু কয়েকঘণ্টা পরই জানু-পিএফ’র টুইটার অ্যাকাউন্টে বলা হয়, সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট মুগাবে ও তার স্ত্রী গ্রেসকে আটক অবস্থায় রেখেছে। একইসঙ্গে বহিষ্কৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগবাকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে পাশাপাশি আরেকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, প্রেসিডেন্ট মুগাবে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই পদত্যাগ ঘোষণা যে অবশ্য তিনি সেনাবাহিনীর বন্দুকের নলের মুখেই করতে বাধ্য হচ্ছে, সে ধারণা স্পষ্ট হচ্ছে পর্যবেক্ষকদের মতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এসব নানামুখী খবরের মধ্যে রাজধানী হারারের রাস্তায় দেখা যাচ্ছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানের টহল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সেনাবাহিনী ট্রাফিক নির্দেশনায়ও নেমে গেছে।
জিম্বাবুয়ের রাজনীতিতে এই টানাপোড়েন শুরু হয় গত সপ্তাহে ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগবাকে বহিষ্কার করা হলে। সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ৭৫ বছর বয়সী নানগাগবাকে ৯৩ বছর বয়সী মুগাবের উত্তরসূরী ধরা হচ্ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ৫২ বছর বয়সী স্ত্রী গ্রেসও রাজনীতির ময়দানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে নানগাগবাকে বহিষ্কারের আহ্বান জানালে তা বাস্তবায়ন করে ফেলেন মুগাবে। আগামী বছর দেশটিতে ভোট হওয়ার কথা বিধায় এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি নানগাগবার সমর্থক সেনাবাহিনী।
এক রক্ষক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর ১৯৮০ সালে শ্বেতাঙ্গদের শাসন শেষ হলে মুগাবে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ক’বছর প্রধানমন্ত্রী থাকলেও ১৯৮৭ থেকে তিনি আফ্রিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এইচএ/
আরও পড়ুন
** জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, ক্যু’র অভিযোগ নাকচ
** মুগাবে-সেনাপ্রধান পাল্টা বক্তব্য, রাস্তায় জলপাই ট্যাংক
** ‘অবাধ্য’ ভাইস প্রেসিডেন্টকে বহিষ্কার করলেন মুগাবে