বুধবার (২২ নভেম্বর) সকালে নেপিদোতে এই সংলাপ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের দাবি জানিয়ে আসা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই সংলাপের দিকে তাকিয়ে আছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের নেতৃত্বে সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এম সুফিউর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর (সরকারপ্রধান) অং সান সু চি’র কার্যালয়ের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এই সংলাপ শুরুর আগে নেপিদোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, তিনি এই বৈঠকের ইতিবাচক ফলের ব্যাপারে আশাবাদী। সবাই এদিকেই তাকিয়ে আছে।
মধ্যাহ্ন ভোজের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপে বসবেন মিয়ামারের স্টেট কাউন্সেলর কার্যালয়ের মন্ত্রী কিয়াও তিন্ত সুয়ের সঙ্গে। আর চূড়ান্ত সংলাপে তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বসবেন স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি’র সঙ্গে। এই বৈঠকটিও হবে মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিদোতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংলাপে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার একটি সুনির্দিষ্ট টাইমফ্রেম বা সময়সীমা চাইছে মিয়ানমারের কাছ থেকে। যেন ওই সময়ের মধ্যেই তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ হয়। আর এজন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের দিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বৈঠকে।
একটি সূত্র বলছে, দু’পক্ষই নিজেদের মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকলে তা কমানোর চেষ্টা করছে। আর সবকিছু ঠিকঠাক চললে উভয়পক্ষ বৃহস্পতিবার একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে পারে।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মধ্যে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) নেপিদোতে এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ে (আসেম) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিয়ানমারের নেত্রী সু চি জানান, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রয়েছে। অবিলম্বে সমঝোতা স্মারক সই করা হচ্ছে।
‘এ সপ্তাহে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা শেষে গত তিন মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ‘নিরাপদ ও স্বপ্রণোদিত প্রত্যাবাসনের’ বিষয়ে স্মারক সই হবে। ১৯৯০ সালের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কাঠামো অনুযায়ী এটি হতে পারে। ’ বলেন সু চি।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদে রাখাইনে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত সোয়া ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে সংকটের শিগগির সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এইচএ/