শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন নিহত হয়। আহত হয় আরও শতাধিক লোক।
জনপ্রতিনিধিদের শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধাজনক একটি সংশোধনী আনায় গত ৬ নভেম্বর থেকে ইসলামাবাদসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে তেহরিক-ই-লাবাইক নামে একটি কট্টরপন্থী সংগঠন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শপথে এই পরিবর্তন আনা ধর্ম অবমাননা বা ব্লাসফেমির শামিল।
বিক্ষোভকারীরা সপ্তাহ তিনেক ধরে রাজধানীর রাস্তা দখলে রাখলেও তাদের সরাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে তাদের সঙ্গে যোগ হয় আধা-সামরিক বাহিনী পাকিস্তান রেঞ্জার্স। পুলিশ ও রেঞ্জার্স মিলে শনিবার সরকারের নির্দেশে শুরু করে সড়ক দখলকারীদের উচ্ছেদ অভিযান। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে ইসলামাবাদ রূপ নেয় রণক্ষেত্রে। এ সময় কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর। বিক্ষোভকারীরা চালায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ।
পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসীকে ফোন করে ‘পরিস্থিতি’ শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবেলার আহ্বান জানান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। এরপর সন্ধ্যায় সরকারের তরফ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী তলব করা হয়।
রোববার (২৬ নভেম্বর) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়ে সেনাসদর থেকে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী। কিন্তু সেনা সদস্যদের মোতায়েনের আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় নেওয়া দরকার। যেমন- ধর্মীয় বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরাতে পুলিশের ক্ষমতার পুরোপুরি প্রয়োগ কিভাবে হলো না, রেঞ্জার্সকে কেন লিখিত কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি ইত্যাদি।
চিঠিতে বলা হয়, ঐতিহ্যগতভাবে সেনাবাহিনী জনসমাগম বা বিক্ষোভকারীদের সরানোর জন্য নয়। সেনা মোতায়েনের বিষয়টি এই সপ্তাহের শুরুতেই (রোববার-সোমবার) সুপ্রিম কোর্ট ও ইসলামাবাদ হাইকোর্টের অনুমতিক্রমে হতে হবে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরও রোববার ইসলামাবাদের রাস্তায় রয়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে ইসলামাবাদে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী আব্বাসী ও সেনাপ্রধান বাজওয়া। এরইমধ্যে অবশ্য রেঞ্জার্সকে অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৭
এইচএ/