গাজা: আটক ত্রাণবাহী নৌযানবহরের ফিলিস্তিনপন্থী মানবাধিকারকর্মীদের ফেরত পাঠাতে শুরু করেছে ইসরায়েল।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়ে ইসরায়েল সরকার মানবাধিকারকর্মীদের ছাড়ার উদ্যোগ নেয়।
এরই মধ্যে ছাড়া পাওয়া ১২৪ জন মানবাধিকারকর্মী বাসযোগে জর্দানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। এছাড়া আরো ২০০ জন নিজ দেশে ফেরার জন্য ইসরায়েলের তেল আবিব বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র একজন মুখপাত্র বলেন, “৩৫টি দেশের আটক ৬৮২ জন নাগরিকের সবাইকেই খুব দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ”
অবশ্য গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েল বলেছিল, দেশটির নৌবাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগে কিছু মানবাধিকারকর্মীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
গাজায় ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধ ভাঙতে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ওই মানবাধিকারকর্মীরা সম্প্রতি গাজার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। সোমবার ইসারায়েলের জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছলে দেশটির নৌসদস্যরা হামলা চালিয়ে ওই মানবাধিকারকর্মীদের আটক করে।
বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের ওই হামলায় কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকেই। আঙ্কারা বলছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত চার জন তুরস্কের নাগরিক।
মুক্তি পাওয়া ব্রিটিশ নাগরিক হাসান নওয়ারাহ আক্রমণের মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে বলেন, “মুহূর্তের মধ্যে আমাদের বহনকারী ম্যাভি মারমারা নৌযানকে ইসরায়েলের কয়েকটি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজ ঘিরে ফেলে। এরপর শুধু আর্তচিৎকার ও বুলেটের শব্দ শুনেছি। ”
এদিকে, আটকাবস্থায় বন্দি নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
আলজেরিয়ার নাগরিক ইজ্জেদিন জাহরোর নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে বলেন, “তারা আামদের খাবার দেয়নি, পানি দেয়নি, ঘুমোতে দেয়নি। এমনকি টয়লেট পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেয়নি। ”
ছাড়া পাওয়ার পর মৌরিতানিয়ার নাগরিক মোহাম্মদ গোলাম বলেন, “আমরা অবৈধভাবে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছি এই কথা লেখা একটি কাগজে তারা আমাদের স্বাক্ষর নিতে চাচ্ছিল। ”
মানবাধিকারকর্মীদের ওপর এ হামলার ঘটনাকে ‘অসমর্থনযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পরারাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটন। জাতিসংঘ এ হামলার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। এছাড়া তুরস্ক এই হামলাকে একটি ‘নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেছে।
এই ঘটনাকে চূড়ান্ত রকমের মানবিক বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেন ইংল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী নিক কেগ।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১০
আরআর/কেএল/জেএম