মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন নাগরিকরা। তবে ব্যাপক ধরপাকড় এবং মারধরের স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে আন্দোলনকারীদের।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজাখস্তানের সবচেয়ে বড় শহর আলমাতির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন আসিল (ছদ্মনাম)। সহিংসতার সময় গুলিবিদ্ধ হন ওই নারী।
তিনি বলেন, ইউনিফর্ম পরা সশস্ত্র ব্যক্তিরা হাসপাতালে আসেন। তাদের মধ্যে থাকা একজন চিৎকার করে বলেন, আবারও বিক্ষোভে জড়ালে মেরে ফেলা হবে।
সহিংসতার কথা স্মরণ করে আঁতকে ওঠেন আসিল। তিনি মনে করছেন, সশস্ত্র ব্যক্তিরা পুলিশের বিশেষ বাহিনী কিংবা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া লোকদের খুঁজে খুঁজে গ্রেপ্তার করছিল তারা। চলমান ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে ৫৭ বছর বয়সী আসিল ভয় পাচ্ছেন, তাকেও হয়তো গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
অবশ্য আসিলকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিল সশস্ত্র ব্যক্তিরা। কিন্তু তিনি গুরুতর আহত হওয়ায় হাঁটতেই পারছিলেন না। অন্য অনেকের মতো জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন আসিল।
আন্দোলনের সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গোলাগুলি ও স্টান গ্রেনেডের শব্দে কেঁপে ওঠে চত্বর। আমার পায়ে গুলি লাগে। পা থেকে রক্ত ঝরছিল। আমাকে একটি ট্রাকে করে আলমাতির হাসপাতালে নেওয়া হয়। আমার পায়ের ওপর আরও অনেকে অচেতন হয়ে শুয়ে ছিল।
বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম তেলের ভাণ্ডার রয়েছে কাজাখস্তানে। অথচ দেশটির অধিকাংশ মানুষ সেই সম্পদের ভাগ পায় না। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনে নামে কাজাখস্তানের মানুষ। সেই আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়। সরকারিভাবে বলা হয়েছে, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ, সেনাসহ ২২৫ জন প্রাণ হারান। গ্রেপ্তার করা হয় ১০ হাজার জনকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২২
এনএসআর