বেইজিং: সমাধি-চুরির অভিযোগে চীনের একটি আদালত তিব্বতের একজন বিশিষ্ট পরিবেশবাদীকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাঁর আইনজীবী শুক্রবার এ তথ্য জানান।
এদিকে, কারাদণ্ড পাওয়া কার্মা সামদ্রুপের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, তাকে পুলিশি হেফাজতে ‘নির্মম নির্যাতন’ করা হয়েছে।
চীনের সিনজিয়াং অঞ্চলে চলতি সপ্তাহে পরিবেশবাদী ও শিল্প সংগ্রাহক কার্মা সামদ্রুপ (৪২) এর বিচার শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে সমাধি-চুরির অভিযোগ আনা হয় এবং পরে সমাধি থেকে চুরি করা নৃতাত্ত্বিক শিল্পবস্তুগুলো ফেরত দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তুলেও নেওয়া হয়। একইসঙ্গে এই ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, নৃতাত্ত্বিক বস্তুগুলো চুরি করা হয়েছিল।
কার্মার আইনজীবী পু ঝিকিয়াং বলেন, সিনজিয়াং এর আইনজীবীরা তাঁর বিরুদ্ধে পুর্বের অভিযোগগুলো পুনরুজ্জীবিত করেছেন। চলতি সপ্তাহে ওই আইনজীবীরা বলেন, সমাধি থেকে চুরি করার জন্য সামদ্রুপ চোরদের প্ররোচিত করেছিলেন।
ঝিকিয়াং ফোনে এএফপিকে বলেন, ‘তিনি (সামদ্রুপ) নির্দোষ এবং সিনজিয়াং পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে ও তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর জন্য কোনো দোভাষীও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ’
তিনি আরো বলেন, ‘তিব্বতবাসীরা কফিন, মৃতদেহ স্পর্শ করে না। মাটিতে কবর দেওয়ার তাদের নিয়ম নেই, উন্মুক্ত স্থানে মৃতদেহ ফেলে রাখা ও পানিতে ভাসিয়ে দেওয়াই তাদের আচার। সমাধি-চুরি করা তাদের জন্য নিষিদ্ধ। ’
ঝিকিয়াং এর মতে, কার্মা সামদ্রুপ আদালতে বলেন, পুলিশের হেফাজতে থাকার সময় খাবার গ্রহণের জন্য মূল্য পরিশোধের অঙ্গীকার করিয়ে নিয়েছিলেন তাঁর কারারক্ষক। এমনকি টয়লেটে যাওয়ার জন্যও তাঁকে মূল্য দিতে হতো।
এ ব্যাপারে পুলিশ বা আদালত কেউই মন্তব্য করেননি।
এদিকে, ভারত থেকে তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের মুখপাত্র থুবতেন সামফেল এএফপিকে বলেন, ‘কার্মা সামদ্রুপকে ভয়ংকরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলের ধর্মশালা শহরে তিব্বতের নির্বাসিত সরকারের প্রধান কার্যালয় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, কার্মা সামদ্রুপের সমর্থকরা মনে করে, তাঁকে গ্রেফতার ও বিচারের মুখোমুখি করার ফলে তাঁর দুই ভাইয়ের মুক্তির বিষয়টা বাধাগ্রস্ত হলো।
সংগঠনটি আরো জানায়, কার্মা সামদ্রুপের দুই ভাই তিব্বতের সরকারি কর্মকর্তাদের পরিবেশবিরোধী কার্যকলাপের বিষয়টা সামনে তুলে ধরলে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বাংলাদেশ স্থানী সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১০
আরআর