ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়তে চান নন্দীগ্রামের জুয়েল

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়তে চান নন্দীগ্রামের জুয়েল ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে ফিরে: উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন অর্থের। সঙ্গে থাকতে হবে সততা।

উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের জন্য সুশৃঙ্খল প্রশাসন জরুরি। পাশাপাশি সবার মধ্যে শতভাগ আন্তরিকতারও প্রয়োজন রয়েছে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ে তুলতে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম কাজই হবে এগুলো সুন্দরভাবে গুছিয়ে নেওয়া। এরপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম পৌরসভার সদ্য নির্বাচিত স্বতন্ত্র মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একান্ত আলাপচারিতায় বাংলানিউজকে তার এ পরিকল্পনার কথা জানান।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) নন্দীগ্রামে নিজ বাড়িতে কথা হয় জুয়েলের সঙ্গে।

তিনি জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী পৌরবাসীর নাগরিকসেবা নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, ২০০৪ সালে এই পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর আমাকে প্রশাসক নিযুক্ত করা হয়। তখন আমি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ছিলাম। মাত্র ৮ মাস প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আমি জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হই। সে সময় পৌরসভায় কিছুই ছিল না বললেই চলে। দায়িত্ব পাওয়ার পর রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধ্যানুযায়ী উন্নয়ন কাজ করি। কিন্তু এরপরও অনেক উন্নয়নমূলক কাজ অসমাপ্ত রয়ে যায়। তবু তৃতীয় থেকে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নতী করা হয়।
 
তিনি বলেন, অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য ২০১১ সালের পৌরসভা নির্বাচনে আবারো মেয়র পদে প্রার্থী হই। কিন্তু সে সময় দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার অভিযোগ আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে ওই নির্বাচনে আমি পরাজিত হই।  

আলাপচারিতায় জুয়েল জানান, ‍মূলত তারপর থেকেই পরবর্তী নির্বাচন করার জন্য নবউদ্যমে মাঠে নামেন তিনি। দলমতের ঊর্দ্ধে তিনি সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জগ প্রতীক নিয়ে জয়ী হন।

জুয়েল জানান, ১৯৮৭ সালে বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজে এইচএসসিতে পড়াকালে ছাত্রদলে নাম লেখিয়ে রাজনীতি শুরু তার। পরের বছর নন্দীগ্রাম থানা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। একই বছর সরকারি আযিযুল হক কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচন করে হেরে যান।

দীর্ঘ ৯ বছর ছাত্রদলের সভাপতি থাকার পর ১৯৯৬ সালে বিএনপির সদস্য হন। ১৯৯৮ সালে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে দলের উপজেলা শাখার সভাপতি হন। ২০১১ সালের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
 
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই পৌরসভার আয়ের খাত খুবই কম। সদ্য বিদায়ী মেয়র ক্ষমতায় থাকলেও উন্নয়ন খাত বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেননি। এই পৌরসভার ৯০ শতাংশ আয় আসে স্থানীয় ওমরপুর হাট থেকে। অথচ সেই হাটের কোনো উন্নয়ন করা হয়নি।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপর ওমরপুর হাট, ওমরপুর বাসস্ট্যান্ড ও নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডের উন্নয়নকাজে হাত দেব। হাটের পয়নিষ্কাশন, খাবার ব্যবস্থা, পানি সমস্যার সমাধানসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা থাকবে এই হাটে।

অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, সরকারের বার্ষিক বরাদ্দ ও রাজস্ব থেকে প্রাপ্ত আয়েই এসব উন্নয়ন কাজের বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এছাড়া দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই এলাকার উন্নয়নে সরকারসহ সবার সহযোগিতা পাব বলে আশাবাদী।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য করা হবে না। সব এলাকায় সুষমভাবে  উন্নয়ন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরা জনগণের খুব কাছাকাছি থাকেন। এ  জন্য আমরা জনগণের কাছে অনেক বেশি দায়বদ্ধ। অন্যদিকে এমপিদের অবস্থান তো অনেক ওপরে। এছাড়া তারা আইন প্রণেতা। তারা জনগণের জন্য আইন করেন। আমরা সেই আইন বাস্তবায়ন করি।

তবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ও  জনগণ চাইলে আগামীতে সংসদ সদস্য পদেও নির্বাচনের ইচ্ছার কথা জানান তিনি।

বিএনপিতে ফেরা প্রসঙ্গে জুয়েল জানান, কোনো দলে যোগদান করার ইচ্ছে নেই তার। যেভাবে আছেন, বেশ ভালই আছেন। বাকি জীবন স্বতন্ত্র থেকেই মানুষের সেবা করে যেতে চান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
এমবিএইচ/এসআর/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।