ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সাহাবিদের খুতবা-সাহিত্য প্রসঙ্গ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
সাহাবিদের খুতবা-সাহিত্য প্রসঙ্গ

খুতবার শাব্দিক অর্থ বক্তৃতা করা বা ভাষণ দেওয়া। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় খুতবা বলা হয় এমন বক্তৃতা—যাতে আল্লাহর প্রশংসা, তার একত্ববাদের ঘোষণা, রাসুল (সা.) প্রতি দরুদপাঠ এবং উপস্থিত সাধারণের প্রতি উপদেশকথন রয়েছে।



মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর কুবার মসজিদে প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। এতে রাসুল (সা.) নিজেই ইমামতি করেন।
এদিন জুমার নামাজের আগে তিনি দুইটি খুতবা দেন। আর তখন থেকেই শুক্রবারে জুমার নামাজের জামাতের আগে দুইটি খুতবা দেওয়ার বিধান প্রচলিত।

রাসুল (সা.) এর খাদেম ও প্রখ্যাত সাহাবি আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘যখন রাসুল (সা.) আমাদের এখানে (মাদিনা) আসেন তখন আনসারদের প্রতিটি ঘরে কবিতাচর্চা হতো। ইসলামী যুগে দাওয়াতি কাজের জন্যে, ব্যক্তির শৌর্য-বীর্য ও চেতনাবোধ জাগিয়ে তোলার জন্যে, বিভিন্ন দল ও মতের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যে এবং শত্রুকে আতঙ্ক দেখিয়ে বিতাড়নের জন্যে খুতবার বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সাহিত্যের মর্যাদা আরো বেড়ে যায়। ’ (আল-বায়ান ওয়াত তাবয়িন, ২/৯৮; জুরজি জায়দান, তারিখু আদাবিল লুগাহ্ আল-আরাবিয়্যাহ, ১/১৮৭)

ইসলামী যুগে সাহিত্য শুধু উৎকর্ষই হয়নি, বরং তা নতুন গতিপথও পেয়েছে। ইসলাম সাহিত্যের গুরুত্ব বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিষয়বস্তু ও রীতি পদ্ধতিতেও নতুনত্ব এনেছে। ওয়াজ-নসিহত, দিক-নির্দেশনা, উপদেশমূলক সাপ্তাহিক ও বাৎসরিক জুমা, ঈদ ও হজের খুতবা ছাড়াও তখন অন্য যে সকল খুতবা আত্মপ্রকাশ করে তার মধ্যে—যুদ্ধ-সংগ্রামের খুতবা, পারস্পরিক বিতর্কের খুতবা, বিজয়ের খুতবা এবং শোকজ্ঞাপক খুতবা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

রাজনৈতিক খুতবা, প্রতিনিধি মিশনের খুতবা ছাড়াও আরও এক প্রকার অতি গুরুত্বপূর্ণ খুতবার আত্মপ্রকাশ ঘটে সে যুগে—খিলাফতের খুতবা নামে যেটিকে অভিহিত করা হয়। এটি হলো খলিফা নির্বাচনের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া তার প্রথম নীতি-নির্ধারণী ভাষণ। যেকোনো প্রাদেশিক শাসনকর্তার ভাষণও এর অন্তর্ভুক্ত।

খ্যাতিমান সাহাবি খতিবদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছেন আলী ইবন আবি তালিব (রা.)। এরপর আবু কবর, উমার ও উসমান (রা.) ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম। প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা ও সাহিত্যিক আবুল হাসান আল-মাদাইনি বলেন, ‘আবু বকর (রা.) খতিব ছিলেন, উমর (রা.) খতিব ছিলেন এবং উসমান (রা.)-ও খতিব ছিলেন, তবে আলী ছিলেন তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ খতিব। ’ (আল-বায়ান ওয়াত তাবয়িন, ১/৩৫৩)

পুরুষ খতিবদের পাশাপাশি অনেক মহিলা খতিবের নামও পাওয়া যায়। যারা বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বক্তব্য ও ভাষণ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.), উম্মুল খায়র আল-বারকিয়্যা (রা.), আজ-জারকা বিনতে হাদি (রা.), ইকরাশা বিনতে আল-আতরাশ (রা.)-সহ আরো অনেকে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।