ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ভরে উঠেছে ইজতেমা ময়দান, সড়কের পাশে বসছেন মুসল্লিরা

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৪
ভরে উঠেছে ইজতেমা ময়দান, সড়কের পাশে বসছেন মুসল্লিরা

গাজীপুর: দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আগমনে ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে বিশ্ব ইজতেমার ময়দান। তারপরও মুসল্লিদের ঢল থামছে না।

ময়দানে জায়গা না পেয়ে তারা সড়ক, মহাসড়কের পাশে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিচ্ছেন।  

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

বিশ্ব ইজতেমা ঘুরে দেখা গেছে, এবার বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে গত দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে পৌঁছায়। এছাড়া বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরা ইতোমধ্যে ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। ধর্মপ্রাণ এসব মুসল্লিদের আগমনে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে অবস্থিত বিশ্ব ইজতেমার ময়দান। প্রতি বছরের মতো এবারও ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশ নিয়েছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী মুসল্লিরা। ময়দানে জায়গা না পেয়ে অনেকেই কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ইজতেমার টয়লেটের ছাদে চট ও পলিথিনের শামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। পাশেই রান্না বান্না জায়গা করে নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দলে দলে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মুসল্লি আসতে দেখা গেছে।  বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) কয়েক লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে জোহরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও কামারপাড়া সড়কে প্রচণ্ড ধুলাবালুতে মুসল্লিরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।  তবে সড়ক দুটিতে কোনো ধরনের যানজট নেই। স্বস্তিতে মুসল্লিরা ময়দানে আসতে পারছেন। ইজতেমার ময়দানে কয়েক লাখ মুসল্লির নিরাপত্তায় রয়েছে র‌্যাব ও পুলিশসহ কয়েক হাজার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে পুরো ময়দান।

শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শুক্রবার ও শনিবার দিনব্যাপী শীর্ষস্থানীয় মাওলানাদের বয়ান চলবে। পরে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের আগেই আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

এরপর আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব পরিচালনা করবেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা। একইভাবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি (রোববার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের (২০২৪ সালের) বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা।

বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়া মুসল্লি ইকরাম আলী জানান, লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারছি এটা ভাগ্যের বিষয়। এতো মুসল্লি একত্রিত হয়ে বয়ান শুনবো, এক সঙ্গে কয়েক রাত কাটাবো, একসঙ্গে চলবো এটা আনন্দের এবং খুশির। এ রকম ভাগ্য সবার হয় না। শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিদের বয়ানের মাধ্যমে জানতে পারবো আখিরাতের কথা। জানবো ইহকাল-পরকাল সম্পর্কে অজানা নানান হাদিস। এত মুসল্লি এক সঙ্গে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

মোহাম্মদ রিয়াজুল করিম নামের আরেক মুসল্লি বলেন, মাদারীপুর থেকে ইজতেমায় এসেছি। এর আগেও এসেছি। বছরে একবারই সুযোগ হয় লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে একত্রে থাকার। এক সঙ্গে নামাজ আদায় করার। শত চেষ্টা করলেও এরকমভাবে কয়েক লাখ মুসল্লি একত্রিত করা সম্ভব হবে না। প্রতিবছর আমরা তাবলীগ জামাতের সাথীরা এভাবে একত্রিত হয়ে নামাজ আদায় করি। এখানে বয়ান শুনি এবং আল্লাহর পথে চলার চেষ্টা করি। আমরা নিজেরাই এখানে রান্না-বান্না করি নিজেদের কাজগুলো নিজেরাই করে নিই। যখন শীর্ষ স্থানীয় মুরুব্বিরা বয়ান করেন তখন তা মনোযোগ সহকারে শুনি।

বিশ্ব ইজতেমার মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুরুব্বি মুফতি জহির ইবনে বলেন, বিশ্ব ইজতেমার ময়দান মুসল্লিদের আগমনে ভরে গেছে। ময়দানে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা ভোগান্তিতে পড়বে, অনেকেই ফিরে যাবে। আমরা অনেক আগেই আবেদন করেছি আমাদের প্রথম পর্বের ইজতেমাকে দুই ভাগে দুই পর্বে করার জন্য। জায়গার সংকট ছাড়া আমাদের কোনো সমস্যা নেই। ইতোমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে অবস্থান করছেন। এছাড়া দেশ-বিদেশের আরও মুসল্লির আসা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪
আরএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।