যে ব্যক্তি তার স্ত্রী, বোন ও পরিবারের নারীদের অবাধ চলাফেরা, অশালীন জীবনযাপন ও পাপপূর্ণ জীবনাচার মেনে নেয় এবং তাদের এসব গর্হিত কাজ করা থেকে বাধা দেয় না, তাকে ইসলামের পরিভাষায় দাইয়ুস বলা হয়। দাইয়ুস ব্যক্তি হতে পারে স্বামী, পিতা কিংবা ভাই।
ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘তিন ধরনের ব্যক্তির জন্য (সফলকাম মুমিনদের সঙ্গে) জান্নাতে প্রবেশ করা আল্লাহ হারাম করেছেন। ১. মাদকাসক্ত ব্যক্তি, (যে নিয়মিত মদপানে আসক্ত) ২. মা-বাবার অবাধ্য সন্তান। ৩. দাইয়ুস ব্যক্তি, যে তার পরিবারের (অর্থাৎ, স্ত্রী, দাসী এবং নিকটাত্মীয়দের) পাপ কাজ (তথা, ব্যাভিচার ও ব্যাভিচারের দিকে আহ্বান করে—এমন কাজকর্ম) মেনে নেয়।
[ইমাম তিবি (রহ.) বলেন, অর্থাৎ সে তার পরিবারকে অন্যায় গর্হিত কাজ করতে দেখে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তার আত্মমর্যাদবোধে বাধে না। তাদের এ করা থেকে বাধা দেয় না। উল্টো সব কিছু মেনে নেয়) (মিরকাতুল মাফাতিহ, খণ্ড : ০৬ হাদিস নং : ৩৬৫৫, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬১১৩, নাসায়ি, হাদিস : ২৫৬২)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)- এর মুসনাদে আহমদের বর্ণনা এমন: ‘তিন ধরনের ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। ১. মা-বাবার অবাধ্য ব্যক্তি। ২. দাইয়ুস ব্যক্তি। ৩. ওই সব নারী—যারা চলায় বলায় পুরুষদের বেশভূষা গ্রহণ করে। ’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬১৮০)
দাইয়ুস ব্যক্তির ইবাদত-বন্দেগি কি কবুল হবে?
এ ব্যাপারে ফতোয়া নিম্নরূপ: ‘যদি কোনো ব্যক্তির স্ত্রী পর্দা না করে তাহলে সে ব্যক্তির ওপর কর্তব্য হচ্ছে স্ত্রীকে পর্দা করার ওপর বাধ্য করা। কিন্তু তা না করে যদি সে স্ত্রীর বেপরোয়া, পাপপূর্ণ জীবনযাপন মেনে নেয় এবং সে ইবাদত-বন্দেগিও করে তাহলে এ অবস্থায় স্বামী গোনাহগার ও জাহান্নামি হবে। আর নামাজ ও ইবাদত গোনাহগারেরও কবুল হয়।
(আপ কে মাসায়েল অওর উন কা হল : ৮/৬৮, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ২৮/৯১)
সুতরাং ইবাদত-বন্দেগি পরিপূর্ণরূপে কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই দাইয়ুসের মন্দ গুণাবলি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা নাহলে আল্লাহর কঠিন আজাব থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৪
এএটি