ঢাকা, বুধবার, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

খারাপ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেল যা করণীয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
খারাপ স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে গেল যা করণীয়

ঘুমের মধ্যে অনেকে দুঃস্বপ্ন দেখে চমকে ওঠে। ভয় পেয়ে ঘাবড়ে যায়।

দুঃস্বপ্নের ক্ষতি থেকে বাঁচতে ইসলামে আছে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘স্বপ্ন তিন প্রকার—এক. সত্য স্বপ্ন। দুই. মানব মনের চিন্তা-ভাবনা (অর্থাৎ যা চিন্তা করে, তাই দেখে)। তিন. শয়তানের পক্ষ থেকে ভীতি প্রদর্শনমূলক দুঃস্বপ্ন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২২৮০)

স্বপ্ন সব সময় মিথ্যা ও বিভ্রমের হয় না। কখনো সত্যও হয়ে থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কিয়ামত ঘনিয়ে আসবে, তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মুসলমানের স্বপ্ন সত্য হবে। তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী লোক সর্বাধিক সত্য স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৭৯৮)

অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো দুঃস্বপ্ন দেখে কেউ ঘুম থেকে জেগে উঠলে তার জন্য কিছু করণীয় হলো—

১. বাঁ দিকে তিনবার থুতু ফেলা

আবু কাতাদা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, ‘ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আর দুঃস্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। তোমাদের কেউ যদি দুঃস্বপ্ন দেখে, তবে সে যেন বাঁ দিকে তিনবার (হালকাভাবে) থুতু নিক্ষেপ করে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৭৯০)

২. অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাওয়া

আবু কাতাদাহ (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে আর দুঃস্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। সুতরাং যে কেউ দুঃস্বপ্ন দেখলে যেন বাঁ পাশে থুতু ফেলে এবং এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭৯৫)

৩. দুঃস্বপ্নের কথা কারো কাছে প্রকাশ না করা

আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি পছন্দনীয় স্বপ্ন দেখে, তাহলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। এবং অন্যের কাছে এ স্বপ্নের কথা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত দুঃস্বপ্ন দেখে, তাহলে এটা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯৮৫)

৪. ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করা

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুঃস্বপ্ন দেখে, তবে সে যেন ঘুম থেকে উঠে দাঁড়ায় এবং নামাজ আদায় করে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭৯৮)

৫. পাশ ফিরে ঘুমানো

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি দুঃস্বপ্ন দেখে, তবে সে যেন তার পার্শ্ব পরিবর্তন করে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৬১)

৬. দুঃস্বপ্ন দেখার পর না ঘাবড়ানো

জাবের (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একদিন খুতবা দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, ঘুমন্ত ব্যক্তি যা স্বপ্ন দেখে, আমি গত রাতে তাই স্বপ্নে দেখলাম। ঘাড়ে আঘাত করার ফলে তা থেকে আমার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল। আমি পুনরায় ধরে সেটা ঘাড়ে স্থাপন করে দিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বলেন, ‘ঘুমের ঘোরে তোমাদের কারো সঙ্গে শয়তান খেলা করলে সে যেন তা কারো কাছে না বলে। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯১২)

দুঃস্বপ্ন দেখার পর ঘাবড়ে না গিয়ে হাদিসে বর্ণিত দিকনির্দেশনার ওপর আমল করা মুসলমানের একান্ত কর্তব্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।