ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

তাওবার সুফল

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
তাওবার সুফল

পাপমুক্ত জীবন গঠন ও আল্লাহর নৈকট্য লাভে তাওবার কোনো বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনের বহুসংখ্যক আয়াতে মুমিনদের তাওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

তার কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরা হলো-

১. একমাত্র আল্লাহই ক্ষমাকারী: 
যত পাপই হোক না কেন, আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করবেন। কেননা তিনি অতিশয় দয়ালু। ইরশাদ হয়েছে, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে, এরাই তারা যাদের তাওবা আমি কবুল করি, আমি অতিশয় তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৬০)

২. আল্লাহ ক্ষমা করতে ভালোবাসেন: 
আল্লাহ অনুতপ্ত বান্দাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করতে চান। আর যারা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে তারা চাই যে তোমরা ভীষণভাবে পথচ্যুত হও। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ২৭)

৩. আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন: 
যারা পূতপবিত্র জীবনযাপন করে এবং পাপ থেকে তাওবা করে আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে ভালোবাসেন। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

৪. পাপ পরিহার আবশ্যক: 
তাওবা কবুলের জন্য পাপ পরিহার করা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তারা তাওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে তা থেকে নিবৃত্ত থাকবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম তাওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৬)

৫. মৃত্যু আসার আগে তাওবা: 
মৃত্যুর সময় উপস্থিত হওয়ার আগেই তাওবা করতে হবে। নতুবা আল্লাহর দরবারে তাওবা কবুল হবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা আজীবন মন্দ কাজ করে, অবশেষে তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে, আমি এখন তাওবা করছি। আর তাদের জন্যও নয়, যাদের মৃত্যু হয় অবিশ্বাসী অবস্থায়। এরাই তারা যাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তির ব্যবস্থা আছে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮)

৬. ক্ষমার দুয়ার সব সময় খোলা: 
ব্যক্তি যত পাপ করুক না কেন আল্লাহর দরবারে তার জন্য ক্ষমার দুয়ার সব সময় খোলা থাকে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা নিজেদের প্রতি জুলুম করে, তখন তারা তোমার কাছে এলে ও আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং রাসুলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা অবশ্যই আল্লাহকে পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালুরূপে পাবে। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৬৪)

৭. তাওবাকারীর জন্য উত্তম প্রতিদান: 
আল্লাহ তাওবাকারীকে শুধু ক্ষমা করেন না; বরং তাদের জন্য আছে উত্তম প্রতিদান। আল্লাহ বলেন, ‘কিন্তু যারা তাওবা করে, নিজেদের সংশোধন করে, আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাদের দ্বিনে একনিষ্ঠ থাকে, তারা মুমিনদের সঙ্গে থাকবে এবং মুমিনকে আল্লাহ অবশ্যই মহাপুরস্কার দেবেন। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪৬)

৮. তাওবাকারীর জন্য সুসংবাদ: 
আল্লাহ তাওবাকারী মুমিনদের সুসংবাদ প্রদান করে বলেছেন, ‘তারা তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, রোজা পালনকারী, রুকুকারী, সিজদাকারী, সৎকাজের নির্দেশদাতা, অসৎকাজে নিষেধকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা সংরক্ষণকারী; এই মুমিনদের আপনি সুসংবাদ দিন। ’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ১১২)

৯. তাওবা পার্থিব জীবনেও প্রাচুর্য আনে: 
তাওবা শুধু মানুষ পরকালীন জীবনকেই সুন্দর করে না; বরং তা পার্থিব জীবনেও প্রাচুর্য আনে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কোরো, অতঃপর তাঁর দিকেই ফিরে এসো। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। তিনি তোমাদের আরো শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন। তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিও না। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৫২)

১০. তাওবাকারীদের জন্য জান্নাত: 
আল্লাহ তাওবাকারীদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কোরো—বিশুদ্ধ তাওবা; সম্ভবত তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কাজগুলো মোচন করবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। ’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।