বিজ্ঞ আলেমরা বলে থাকেন, মানুষের ভালোবাসার মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া যায়। আর মানুষকে ভালোবাসতে হলে, নিজ নিজ আচার-ব্যবহার, কথা-বার্তা ও চলন-বলনে কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে হয়।
মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে মুসাফাহা করা। অন্যের দুঃখ-কষ্ট-অভিযোগ ধৈর্যসহকারে শোনা এবং ভালো পরামর্শ দেওয়া। মানুষের হৃদয়ের বন্ধ দরজা উন্মুক্ত করার একটি বড় মাধ্যম এ কাজ। এ বিষয়ে হাদিসে আছে, ‘যে মুমিন মানুষের সঙ্গে মিশে এবং তাদের দেওয়া কষ্ট-যাতনায় ধৈর্যধারণ করে সে ওই মুমিন থেকে উত্তম যে মানুষের সঙ্গে মিশে না এবং তাদের দেওয়া কষ্ট-যাতনায় ধৈর্যধারণ করে না। ’ -তিরমিজি
উপরোক্ত কাজ বাদে, যথাসম্ভব মানুষের উপকার করা এবং ভালো কাজের প্রতি মানুষকে উৎসাহ প্রদান করা এবং এ ব্যাপারে তাদের অনুভূতিকে নাড়া দেওয়া, তাদের রূঢ় ব্যবহারে ধৈর্যধারণ করা, মানুষের বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়ানো, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সামান্য হাসি-ঠাট্টা করা, কারো ভুলের প্রতি কঠিন দৃষ্টি না দেওয়া, কর্মসম্পাদনে সক্রিয় ও উদ্যমী হওয়া, কোনো ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে কোনো কাজের দায়িত্ব না দেওয়া, বিভিন্ন ঘটনা কোরআন ও হাদিসের সত্য ঘটনাবলী সমকালীন খবরাখবরের সঙ্গে যুক্ত করে উল্লেখ করা, দয়াশীল ও অনুগ্রহকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া প্রভৃতি বিষয় মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট করার পরীক্ষিত পদ্ধতি। তাই এসবের প্রতি গুরুত্বারোপ করে দ্বীনের খাতিরে মানুষের হৃদয় জয় করার জন্য সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষের কল্যাণে, অভাবে-অনটনে এগিয়ে আসা মানুষের হৃদয় জয় করার একটি বড় মাধ্যম। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। ’ -সূরা আল ইমরান : ১৩৪
মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা না করা এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী জীবনযাপন করা একজন মুসলমানের কাঙ্খিত চরিত্র হতে পারে না। কারণ মুমিনরা পরস্পরে এক ও অভিন্ন শরীরের ন্যায়। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ভালোবাসা ও হৃদ্যতার ক্ষেত্রে মুমিনদের দৃষ্টান্ত হলো একটি দেহের মতো, যার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হলে অন্যসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনিদ্র রাত্রিযাপন ও জ্বরাগ্রস্ততার মাধ্যমে একে অন্যকে ডাকে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫