নাম মক্কা মসজিদ। কিন্তু এটি পবিত্র নগরী মক্কার কোনো মসজিদ নয়।
কুতুব শাহি সাম্রাজ্যের পঞ্চম শাসক মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ মসজিদটি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মসজিদটি শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং পুরো শহরের পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি। মসজিদটির সামনের খিলানগুলো গ্রানাইডের টুকরা দিয়ে নির্মিত। এগুলো নির্মাণে সময় লেগেছে পাঁচ বছর। মসজিদটি নির্মাণে পাঁচ হাজার শ্রমিক অংশ নেন। মসজিদটির ভিত্তি স্থাপন করেন মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ। পরে মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব হায়দ্রাবাদ জয়ের পর মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ করেন।
মসজিদের প্রধান নামাজ কক্ষটির দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট। প্রস্থ ২২০ ফুট আর উচ্চতা ৭৫ ফুট। একসাথে ১০ হাজার মুসল্লি এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদটির প্রধান নামাজকক্ষটির ছাদ স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি খিলানের ওপর। এই ১৫টি খিলান সাজানো হয়েছে তিনটি সারিতে। প্রতিটি সারিতে রয়েছে পাঁচটি করে খিলান। মসজিদের প্রধান স্থাপনা দু’টি বিশাল অষ্টাভুজাকৃতির কলাম দ্বারা সংগঠিত। প্রতিটি কলাম তৈরি করা হয়েছে একটিমাত্র গ্রানাইডের টুকরা দিয়ে। মসজিদের মূল ভবনের ছাদের চার দেয়ালের বাইরের অংশ গ্রানাইড ব্লক দিয়ে আবরণ দেয়া।
মসজিদটির কাছেই ঐতিহ্যবাহী চৌমহল্লা, লাদ বাজার ও চারমিনার অবস্থিত। এই মসজিদের স্থাপনার সঙ্গে ঐতিহাসিক চারমিনার ও গোলকন্দা দুর্গের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
মসজিদ এলাকায় প্রবেশ দরজায় কোনাকুনি আকৃতির একটি দালান আছে। যেখানে মার্বেল পাথরের আবরণকৃত কিছু কবর আছে। এই স্থাপনাটি তৈরি করা হয় আসাফ জহির শাসনামলে। এই ভবনে বাদশা নিজাম ও তার পরিবারের সদস্যদের মাজার বিদ্যমান।
মক্কা মসজিদটি ভারতের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। দীর্ঘদিন এটা রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং দুষণের ফলে এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার অনেক অংশ নষ্ট হয়ে যায় ও ভেঙে যায়। ১৯৯৫ সালে এই স্থানে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠিত হয়। তাই ভবিষ্যতে এই স্থাপনাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা জন্য অন্ধ্র প্রদেশ সরকার ২০১১ সালের আগষ্ট থেকে যানবাহনমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘন্টা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫