ইসলামে ধোঁকা ও প্রতারণার কোনো স্থান নেই। কোনো মুসলমান ধোঁকা দিতে পারে না।
অন্য এক আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা যদি তোমাকে ধোঁকা দিতে চায়, তবে আল্লাহই তোমার জন্য যথেষ্ট। তিনিই নিজ সাহায্যে মুমিনদের দ্বারা তোমাকে শক্তিশালী করেছেন। –সূরা আনফাল : ৬২
বর্ণিত আয়াতসমূহে আল্লাহতায়ালা ধোঁকাবাজদের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছেন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় তারা মুখের কথার মাধ্যমে আল্লাহ ও মুমিন বান্দাকে ধোঁকা দিতে চায়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই ধোঁকার শিকার হয়েছে। কেননা, এ ধোঁকার পরিণাম তাদের জন্য অশুভ হবে। তারা মনে করছে নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে তারা কুফরের পার্থিব পরিণতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। অথচ আখেরাতে তাদের জন্য কঠিন আজাব অপেক্ষা করছে। নবী করীম (সা.) ধোঁকা ও প্রতারণাকারী সম্পর্কে কঠোর বাক্য উচ্চারণ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ধোঁকাবাজ ও প্রতারণাকারী জাহান্নামে যাবে। -বায়হাকি
বস্তুত যারা আল্লাহতায়ালা, নবী আলাইহিস সালাম ও মুমিনদের ধোঁকা দেবে তারাই কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত অন্তরে মজবুত ঈমান লালন করা, ঈমানের কথা প্রকাশ করা ও সে অনুযায়ী আমল করা। তাহলেই সে প্রকৃত মুমিন হতে পারবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, মুখে এক কথা আর অন্তরে আর এক কথা- এটা কোনো মুমিনের কাজ হতে পারে না। মুমিনের বৈশিষ্ট্যই হলো সে কখনও ধোঁকা দেবে না এবং ধোঁকার শিকার হবে না। যুগে যুগে ধোঁকাবাজ ছিল, এখনও আছে। কিন্তু ইচ্ছে করে কারো সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা যাবে না, এমনকি ঠাট্টাচ্ছলেও না।
তাই প্রত্যেক মুমিনের প্রতিজ্ঞা হওয়া দরকার- ধোঁকা দিবো, ধোঁকায় পড়বো না। আমরা যে সমাজে বাস করি সেখানে সর্বত্রই ভেজালের ছড়াছড়ি। ধোঁকা প্রতারণার জাল বিস্তার করছে সর্বত্র। কে কাকে ঠকাবে সে চিন্তায় অস্থির প্রায়। এ কথাগুলো অস্বীকার করার মতো নয়। কেউ অবিশ্বাস করতে পারবে না এ বাস্তব সত্য।
অথচ মুসলমানদের আদর্শ এটা নয়, আমাদের নবীজীর আদর্শ নয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো এক গর্তে দু’বার পা দেয় না। ’ তিনি আরও বলেছেন, ‘মুমিন কাউকে ধোঁকা দেয় না ধোঁকা খায় না। ’ ধোঁকা মুসলমানদের আদর্শ নয়।
চলমান সমাজকে যদি শান্তিময় ও সুখময় করতে হয়, যদি শান্তির অনাবিল নীড় গড়তে হয়, তাহলে অবশ্যই আমাদের ধোঁকা প্রতারণা ও ভেজাল ছাড়তে হবে। তাহলেই সমাজ স্বচ্ছ, সুন্দর ও কল্যাণময় হয়ে ওঠবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘন্টা, মার্চ ৩১, ২০১৫