এক ইহুদি এসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলল, ‘আসসামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনার মৃত্যু হোক। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জবাবে কিছুই বললেন না।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত আয়েশা (রা.) কে বললেন, তাকে আমি কি বলবো? সে আমাকে মৃত্যুর গালি দিয়েছে। তার কথায় কি আমার মৃত্যু হয়েছে বা হবে? আমি যদি তাকে অনুরূপ জবাব দিতাম তাহলে হয়তোবা সে এখানে মরে যেতো। তাই আমি চুপ থাকলাম। চুপ থাকাতে ঝগড়াও হয়নি। আমারও কোনো ঝামেলা হয়নি। ইহুদির সাথে তর্কে জড়িয়ে গেলে আমি বিতর্কিত হতাম। চুপ থাকাতে ঝগড়া-ফ্যাসাদ থেকে নিরাপদ রয়েছি। মঙ্গল এখানেই, মানুষের কল্যাণ হয় ভালো ব্যবহার আর ভালো আচরণে। অকল্যাণ আসে খারাপ আচরণে। আচরণ হয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা।
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে দু’টো অঙ্গের হেফাজতের নিশ্চয়তা দিবে। আমি তোমাদের বেহেশতের সুসংবাদ দিব। তাহলো জিহবা ও লজ্জাস্থান। ’ জিহবা আর লজ্জাস্থানই হলো সমস্ত ক্ষতির মূল। জিহবার কারণে লোভের সৃষ্টি। লোভের কারণে হারাম-হালাল না বেঁচে মানুষ বেপরোয়াভাবে অর্থের পেছনে পাগলের মতো ঘুরে বেড়ায়। একে-অপর থেকে বেশি বেশি সম্পদের মালিক হতে চায়। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা সূরা তাকাসুরে বলেন, ‘তোমরা একে-অপর থেকে বেশি পাওয়ার ধান্দায় জড়িয়ে পড়ে, মানুষকে কবর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। ’
মানুষ সম্পদের মোহে ন্যায় ও বিচার বোধ হারিয়ে ফেলে। এ সব হয় লোকের কারণে আর লোভের মূল হলো জিহবা। জিহবা হলো সব অনিষ্টের মূল। জিহবা দিয়ে মানুষকে গালি দেয়। জিহবা দ্বারা মন্দকথা কিংবা ভালোকথা বলে। জিহবা দ্বারা কথা বলেই মানুষের ক্ষতি করা হয়। জিহবা ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন আচরণের সূত্রপাত ঘটায়। মানুষের সেই কথায় কেউ কাঁদে, কেউবা শিক্ষা দেয় আর কেউ হাসে। জিহবা ব্যবহার করে মানুষের মনে আঘাত দেয়া হয়। মানুষের অধিকার নষ্ট করে কবিরা গুনাহ করা হয় এই জিহবা দ্বারা।
জিহবা দিয়ে গোপন-প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র করা হয়। অগোচরে অন্যের দোষ চর্চা করা হয়। জিহবার অধিক ব্যবহারের কারণে পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া-ফ্যাসাদ, মামলা-মোকদ্দমার ঘটনা ঘটে। এমনকি মারামারি ও রক্তপাতের সূচনাও হয় এই জিহবার কারণে। এভাবেই জিহবা দ্বারা অনেক পাপাচার এবং ধ্বংসের সূত্রপাত হয়।
তাই জ্ঞানীরা বলেন, জিহবা সংযত রাখুন, অনেক অনিষ্টতা থেকে রক্ষা পাবেন। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে সব ধরনের জিহবার অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘন্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৫