ইরান দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। ইরান বিশ্বের সবচেয়ে পর্বতময় দেশগুলোর একটি; এখানে হিমালয়ের পরেই এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ দামভান্দ অবস্থিত।
শহরটি ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বলে বিবেচিত। মাশহাদ রাজধানী তেহরান থেকে ৮৫০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে কাশাফ নদীর তীরে অবস্থিত। শহরটি শিয়া মুসলমানদের তীর্থস্থান হিসেবে বিখ্যাত। তাই প্রতি বছর অসংখ্য শিয়া পূণ্যার্থী এই শহরে তীর্থ করতে আসেন। এই শহরে বিখ্যাত খলিফা হারুন আর রশিদের কবরস্থান অবস্থিত। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মাশহাদ বিখ্যাত ফার্সি কবি ও শাহনামা কাব্যগ্রন্থের লেখক ফেরদৌসির কারণে।
শহরটিতে আন্তর্জাতিকমানের বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাশহাদে আরবি ক্যালিওগ্রাফি চর্চার রেওয়াজ ইরানের অন্য শহর থেকে বেশি। সেটা আবারও দেখল বিশ্ববাসী। কারণ এই মাশহাদে অধ্যাপক ‘ইসমাইলি কুচানি’র তত্ত্বাবধানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ হাতে লেখা কোরআন শরিফটি লেখা হয়েছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও স্বীকৃতি না পেলেও ইরান বলছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ পবিত্র কোরআন শরিফটি ইরানের এক অধ্যাপক ‘আলী আকবার ইসমাইলি কুচাডন’ লিখেছেন। হাতে লিখিত কোরআন শরিফটি চলতি মাসের ৩ তারিখে লেখা শেষ হয়েছে।
ইরান সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল এ কোরআন শরিফটি পরিদর্শনের সময় এর লেখক আলী আকবার কুচানি বলেন, পবিত্র এ কোরআন শরিফটির পৃষ্ঠা ৬৫০টি, ওজন ৫০০ কেজি এবং এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্ত যথাক্রমে আড়াই মিটার এবং ১.৭৫ মিটার। এর প্রতি পৃষ্ঠায় ১৫টি লাইন রয়েছে।
কোরআন শরিফটি লেখতে ও নকশা করতে তাকে ৩০ জন নারী বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, উদারমনস্ক এ ভদ্র মহিলারা কোনো প্রকার আর্থিক প্রত্যাশা ছাড়াই পবিত্র কোরআনে কারিম নকশার জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা অবধি একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।
প্রফেসর কুচানি কোরআন শরিফটি ২০০৯ সালে লেখা শুরু করেন। তিনি আশা করছেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পবিত্র কোরআনে কারিমের এ কপিটি দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার ব্যবস্থা হবে। বর্তমানে কোরআন শরিফটির নকশার কাজে মুহূর্তের আঁচর চলছে।
কোরআন শরিফের ১১৪টি সূরার জন্য ভিন্ন ভিন্ন বর্ণমালায় (কুফি, রেইহান, তৌকিয়, তায়লিক, তাগার, দিওয়ানি, খত্তে রোকাইয়া, খত্তে নাস্তালিক ও শেকাস্তেসহ আরবি ক্যালিওগ্রাফির বিভিন্ন নমুনার বর্ণমালা) ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লেখা হয়েছে। এটা এ কোরআনে কারিমের অনন্য এক বৈশিষ্ট্য। আলোচিত এ কোরআন শরিফের পৃষ্ঠা হিসেবে চামড়ার মতো বিশেষ এক ধরনের কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘন্টা, মে ১১, ২০১৫
এমএ