প্রতি আরবি বছরের মহররম ও শাবান মাসের প্রথম দিন নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ ধৌত করা হলেও এবার তা হচ্ছে না। এক টুইটার বার্তায় পবিত্র মক্কা-মদিনার মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী আরবি নতুন বছরের (মহররম মাস) শুরুতে পবিত্র কাবা ঘর ধোয়ার কাজ সম্পন্ন হবে এবং এবার থেকে বছরে একবার পবিত্র কাবা শরিফ ধোয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা রীতি অনুযায়ী প্রতি বছর শাবান মাসের প্রথম দিন পবিত্র কাবা ঘর ধোয়ার কর্মসূচী পালন করা হয়। সৌদিআরবের বাদশাহ এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেন।
কাবা ঘর পরিষ্কার করতে ব্যবহৃত হয় জমজম পানি, খাঁটি গোলাপজল এবং উন্নতজাতের সুগন্ধী উদ ও কস্তুরি। কাবা ঘর ধোয়ার জন্য ভেতরে প্রবেশের আগে তাওয়াফ ও দু’রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। কাবা শরিফ পরিষ্কার করতে গোলাপের সুগন্ধিযুক্ত জমজমের পানি মেঝেতে ঢালা হয়, তারপর খালি হাতে খেজুর পাতা দ্বারা পরিষ্কার করা হয়। পরিষ্কার করার পর ফ্লোর এবং দেয়াল সাদা কাপড় এবং উন্নতমানের টিস্যু দ্বারা শুকানো হয়। কাবা শরিফ ধোয়ার সময় দুই ঘণ্টা দরজা খোলা থাকে।
মুসলমানরা প্রতিদিন কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। প্রতি বছর লাখ লাখ লোক হজ ও ওমরা পালনে কাবায় আসেন। হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য কাবাঘর প্রদক্ষিণ করা অন্যতম প্রধান একটি কাজ। হজ ও ওমরা পালনকারীরা কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে এর চারপাশে তাওয়াফ করেন। পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম (আ.) কাবাঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) আজ থেকে ৪০০০ বছর পূর্বে আল্লাহর নির্দেশে কাবা ঘর পুনঃনির্মাণ করেন।
পবিত্র কাবা শরিফ ধোয়ার এ কাজটি একটি বড় উৎসব হিসেবে পালিত হয়। যা আসলে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণে করা হয়। ৬৩০ সালে যখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমানরা মক্কা বিজয় করেছিল তখন তিনি মহান আল্লাহর এ পবিত্র ঘরকে ধৌত করেছিলেন।
তবে শাবান মাসে কাবা শরিফ ধোয়া হলেও কাবার গায়ে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে নতুন গিলাফ পড়ানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘন্টা, মে ২০, ২০১৫
এমএ