রমজান মাসকে বলা হয় ইবাদতের বসন্তকাল। তাই রমজান উপলক্ষে মুসলমান মাত্রই বেশি বেশি ইবাদতে প্রয়াসী হন, গুরুত্বসহকারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, রমজানের বিশেষ আমল রোজা ও তারাবি সবাই আদায় করার চেষ্টা করে থাকেন।
সময়মত সেহরি খেতে সবাই উঠি। তখন বিশেষ ইবাদত তাহাজ্জুদের সময়। রমজানে ইচ্ছা করলেই এই আমলটা সহজে করা যায়। একটু আগেভাগে উঠে দু’চার রাকাত নামাজ পড়া তেমন কষ্টের কিছু নয়, কেবলই ইচ্ছার ব্যাপার। মহিলারাও রান্নার ফাঁকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে নিতে পারেন। তাহলে তাহাজ্জুদ পড়ার একটি অভ্যাসও গড়ে উঠবে।
সারা বছর যাদের ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করতে বেগ পেতে হয়, তারা রমজানে সহজেই তা করতে পারেন। এ সুযোগে রমজানে আগে ওঠার অভ্যাস ধরে রেখে সবসময়ের জন্য এ রীতি বহাল রাখুন, তাহলেই তা অভ্যাসে পরিণত হবে।
রমজানে দিনে খাবার-দাবারের ঝামেলা না থাকায় সকাল বেলায় কাজের ঝামেলাও কম থাকে। মহিলারা সে সময়টাকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন। কোরআন নাজিলের মাস হিসেবে এ সময় কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত করা যেতে পারে। তাছাড়া অন্য যে কোনো ইবাদতও করা যেতে পারে।
রমজানে আমরা সবাই ইফতার করি। যে সময়ে দোয়া কবুলের ঘোষণা রয়েছে ইফতারের আগের সময়টা তার অন্যতম। সারাদিন সিয়াম সাধনার পর বান্দা আল্লাহর দরবারে হাত উঠালে আল্লাহ শূন্য হাতে ফেরান না। ইফতারের আগে পরিবারের সবাই মিলে হাত উঠালে তা পরিবারের জন্য বরকতের কারণ হবে। বিশেষ এ সুযোগটি কাজে লাগানোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
অন্যান্য সময়ের মতো রমজানেও কাজের নানা ঝামেলা থাকে, তবে সুযোগ সন্ধানী হলে সবকিছুর মাঝেও লক্ষ্য হাসিল করা যেতে পারে। হাদিসে রমজানে চারটি কাজ বেশি করার নির্দেশ এসেছে। সেগুলো হলো-
১. ইস্তেগফার, তথা গত জীবনের গোনাহ থেকে মুক্তি কামনা। ২. লাইলাহা ইল্লাল্লাহর জিকির। ৩. জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতির প্রার্থনা। ৪. জান্নাত লাভের আকুতি। এই চারটি আমল করার জন্য মনোযোগের প্রয়োজন নিঃসন্দেহে, তবে সব কিছু বাদ দেয়ার অপরিহার্যতা নেই। কাজেই কাজের সময় সবকিছুর মাঝেও তা করা যেতে পারে, কেবল মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন। এসবের একটি প্রার্থনা কবুল হয়ে গেলে আমার লক্ষ্যে আমি পৌঁছে গেলাম। রমজানজুড়ে গোনাহ মাফের হাতছানি কিন্তু থাকেই,আমরা চাইলেই হয়।
নামাজে কোরআনে কারিম খতম করার সুযোগ সাধারণত খুব কম মানুষেরই হয়ে থাকে। কিন্তু রমজানে অন্ততপক্ষে নামাজে পুরো কোরআন শোনার সুযোগ নেয়া যায় ইচ্ছা করলেই। আমাদের দেশের প্রায় সব মসজিদেই খতমে তারাবি হয়। সে হিসেবে রীতিমত তারাবি পড়লেই এ সৌভাগ্য অর্জন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব সহকারে সারা রমজান এক মসজিদে তারাবি পড়া ভালো, না হয় সামান্য ব্যতিক্রমের দরুন কিছু অংশ ছুটে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘন্টা, জুন ২৮, ২০১৫
এমএ/