ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

নামাজে অবহেলা অনেক ক্ষতির কারণ

তাযকিরা খাতুন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
নামাজে অবহেলা অনেক ক্ষতির কারণ

ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। নামাজ তার অন্যতম এবং তা ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।

তাই পবিত্র কোরআনে কারিমের ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।

ইসলামে নামাজের গুরুত্ব-তাত্পর্য যেমন অপরিসীম-তেমনি আল্লাহর রহমত ইহ-পরকালের মুক্তিলাভের প্রধান অবলম্বন হিসাবে নামাজের বৈশিষ্ট্য অতীব তাত্পর্যপূর্ণ। যে ব্যক্তি নামাজের আনুষঙ্গিক শর্তাবলী যথারীতি পালন করে নামাজ আদায় করবেন আল্লাহতায়ালা স্বীয় আশ্রয় ও নিরাপত্তায় রাখার নিশ্চয়তা প্রদান করবেন।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ স্বচ্ছ নহর সমতুল্য অর্থাৎ দৈনিক পাঁচবার ওই স্বচ্ছ পানিতে গোসল করলে যেমন শরীরের ময়লা, ধূলোবালি দূর হয়ে যায়, তেমনি পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ মানুষের সমুদয় গুনাহরাশি মাফ করে দেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, নামাজ ধর্মের ভিত্তি। যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করেছে সে ধর্মকে বিনাশ করেছে।

একবার কিছুসংখ্যক লোক হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)! সর্বোত্তম কাজ কোনটি? উত্তরে আল্লাহর রাসূল বলেছিলেন, ঠিক সময় নামাজ আদায় করা। তিনি আরো বলেছেন, নামাজ বেহেশতের চাবিকাঠি। তিনি অন্যত্র বলেছেন, আল্লাহতায়ালা স্বীয় বান্দাকুলের ওপর তাওহিদের পরে নামাজ অপেক্ষা অধিক প্রিয় কোনো জিনিস ফরজ করেন নাই। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, রোজ কিয়ামতে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব-নিকাশ নেয়া হবে। যে ব্যক্তি সহি-শুদ্ধভাবে পবিত্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করবে। তার পাওনা যথাযথভাবে আল্লাহতায়ালা পূর্ণ করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি নামাজকে অপূর্ণভাবে আদায় করবে তার নামাজকে অন্যান্য আমলসহ নামাজীর মুখমন্ডলে ছুঁড়ে দেয়া হবে।

হজরত রাসূলে মকবুল (সা.) অন্যত্র বলেছেন, যে ব্যক্তি যথারীতি নামাজ আদায় করে রুকু-সেজদা পুরোপুরি সমাধা এবং অন্তরে নম্রতা, বিনয়, ভক্তি ও মহব্বতকে স্থান দেয়, তার নামাজ নূরানী হয়ে আরশ পর্যন্ত আরোহণ করে। সেখান থেকে সর্বদর্শী আল্লাহতায়ালার নিকট দোয়া করতে থাকে। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি অতীব সতর্কতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে না- তাকে অভিসম্পাত করতে থাকে।

এ কথা অনস্বীকার্য যে, নামাজ আমাদের জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত, বরকত-নেয়ামত এবং নাজাত লাভের নির্দেশিকা, সর্বোচ্চ যে বিষয়টি তা হলো- পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে কায়মনে আত্মসমর্পণ করার জন্যে নামাজ সর্বোত্তম মাধ্যম। পবিত্র এই শ্রেষ্ঠতম ইবাদত সম্পর্কে হজরত রাসূলে পাক (সা.) বলেছেন, নামাজ মুমিনের জন্য মেরাজ।

শুধু গুনাহ পাপ পংকিলতা মুক্তিই নয়- পার্থিব জীবনে যে কোনো কঠিন সমস্যায় পড়লে নামাজ পড়ে আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করলে উদ্ধার পাওয়া যায় এবং যে কোনো আপদ-বালা, মুসিবত থেকে নাজাত লাভের ‘সালাতুল হাজত নামাজ’ পড়ারও বিধান রয়েছে।

আখেরাতে নাজাত পাবার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে নামাজ। এই পবিত্র নামাজের মাধ্যমেই আমরা এক কাতারে শামিল হয়ে শ্রেণী বৈষম্য ভুলে যাই এবং দ্বীন-ধর্ম হুকুম-আহকাম পালনে শরিক হই। নামাজের মাধ্যমেই আত্মা পরিশোধিত হয়।

স্মরণ রাখা আবশ্যক, দুনিয়া-আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে অত্যন্ত বিনম্রচিত্তে সমার্পিত হৃদয়ে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে নিজকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করে সত্যিকার আল্লাহর খাস বান্দা হিসাবে আমাদেরকে নামাজের মাধ্যমে নিজদের বিলিয়ে দেই এবং মহান পাক পরওয়ারদেগার জীবনের শেষ মুহর্ত পর্যন্ত সহিহশুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করার তওফিক দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘন্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।