হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। যার ওপর হজ ফরজ তাকে সরাসরি হজ করতে হবে।
হজ পালনের মাধ্যমে মুমিন বান্দা তার অন্তরে আলাদা প্রশান্তি অনুভব করে। সেই সঙ্গে সে দুনিয়া-আখেরাতের প্রভূত কল্যাণ ও বরকত লাভে ধন্য হয়। আল্লাহতায়ালা মানুষকে বাইতুল্লাহর হজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেন এর মাধ্যমে তারা গুনাহ থেকে পাক-পবিত্র হয় এবং জান্নাতে উচ্চ মর্তবা ও মাকাম লাভ করে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর পথের মুজাহিদ এবং হজ ও উমরাকারী হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন। -সুনানে ইবনে মাজা
অন্য বর্ণনায় আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ ও উমরাকারীরা হলো আল্লাহর প্রতিনিধি। তারা আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন আর আল্লাহও তাদের প্রার্থনা কবুল করেন। -মুসনাদে বাযযার
হজের ফজিলত
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি হজ করে এবং অশ্লীলতা ও কটূক্তি থেকে বিরত থাকে সে এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করে যেমনটি তার মা তাকে প্রসব করেছিল। -সহিহ বোখারি
অন্য বর্ণনায় আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন। জিজ্ঞাসা করা হলো, এরপর কী? বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হলো, এরপর? তিনি বললেন, মাবরুর হজ। -সহিহ বোখারি
হজরত জাবের (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মাবরুর হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, মাবরুর হজ কী? ইরশাদ করলেন, খাবার খাওয়ানো ও সালামের প্রসার ঘটানো। -মুসনাদে আহমদ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা তিন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন- ১. যে ব্যক্তি আল্লাহর কোনো মসজিদের উদ্দেশে বের হয়; ২. যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করতে বের হয়; ৩. যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশে বের হয়। -হিলয়াতুল আওলিয়া
কষ্টসাধ্য অবস্থায় হজ করার ফজিলত
হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হজ হলো প্রত্যেক দুর্বলের জিহাদ। -সুনানে ইবনে মাজাহ
মহিলাদের হজ করার ফজিলত
উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। তাহলে আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করব না? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। তোমাদের জন্য উত্তম জিহাদ হলো মাবরুর হজ। -সহিহ বোখারি
উমরার ফজিলত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এক উমরা অন্য উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সবকিছুর কাফফারা। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত। -সহিহ বোখারি
হজে খরচ করার ফজিলত
ইবনে আওন ইবরাহিম ও আসওয়াদের সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তারা বলেছেন, হজরত আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! লোকেরা তো দুইটি ইবাদত নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। আর আমি শুধু একটি নিয়ে ফিরব? তখন তাকে বলা হলো, অপেক্ষা কর। যখন তুমি পবিত্র হবে তখন তানঈমে যাবে এবং (উমরার) ইহরাম বাঁধবে। এরপর অমুক স্থানে যাও। অবশ্য এসবের প্রতিদান হবে তোমার ব্যয় ও কষ্ট অনুযায়ী। -সহিহ বোখারি
অন্য বর্ণনায় তিনি আরও বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উমরার সময় বললেন, তোমার ব্যয় অনুপাতে উমরার প্রতিদান দেয়া হবে। -মুসতাদরাকে হাকেম
হজের সফরের ফজিলত
হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহতায়ালা হজকারীকে তার উটনীর প্রতি কদমে একটি নেকি লেখেন কিংবা একটি গুনাহ মুছে দেন। অথবা একটি মর্তবা বুলন্দ করে। -সহিহ ইবনে হিব্বান
** হজযাত্রীদের জন্য যা জানা জরুরি
** মক্কা শরিফের দর্শনীয় কিছু স্থান
** কবুল হজের জন্য যে আমল বেশি বেশি করা দরকার
** হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ
** বদলি হজ আসলে কী?
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘন্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৫
এমএ/
ইসলাম
হজের বিভিন্ন আমলের ফজিলত- ০১
হজের সফরে খরচের প্রতিদান ব্যয় অনুপাতে প্রদান করা হবে
ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।