ঢাকা: মহানবী (সা.)-এর অনুসারীরা জঙ্গি হয়ে মানুষকে কষ্ট দেবেন তা কোনো দিনও সম্ভব না বলে মনে করেন বিশিষ্ট আলেম মুফতি রুহুল আমিন।
বাংলানিউজের ইসলাম বিভাগের সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, জিহাদ ও জঙ্গিবাদ ভিন্ন জিনিস।
দক্ষিণবঙ্গ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমিন আরও বলেন, মহানবী প্রাণীকে আতঙ্কিত না করার নির্দেশ দিতেন, প্রাণীর রক্ত দেখলে আতঙ্কিত হয় অন্য প্রাণী। সেই নবী জঙ্গিবাদের নির্দেশ দেবেন বা যারা তার অনুসারী তারা জঙ্গি হয়ে মানুষকে কষ্ট দেবেন, এটা কোনোদিনও সম্ভব না। জিহাদ ও জঙ্গিবাদ ভিন্ন জিনিস।
বাংলানিউজের ইসলাম বিভাগের আয়োজনে ‘ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রিয় নবী (স.)-এর মূল্যবোধ চর্চা’ শীর্ষক সেমিনারে ইসলামে ডিজিটাল ব্যবহারের নানা দিকও তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, রাসুলের কাছে বাণী নিয়ে এসেছেন জিবরাইল, মিডিয়ার মাধ্যমে তা এসেছে। এই মিডিয়ার মাঝখানে হ্যাকিং করার কারও যোগ্যতা নেই।
ইসলামের শুরু থেকে টেকনোলজির ব্যবহার এবং শেষ দিনও তা আছে।
পুল সিরাতকে ডিজিটাল ব্রিজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চোখের পলকে হাজার হাজার লাখ লাখ পথ অতিক্রম করবে আমলের বিনিময়ে। এটা মুসলমানদের বিশ্বাস করা জরুরি।
‘ইসলামে যে সব ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার হয়েছে, তার হাজারও নজির রয়েছে। ইসলাম সব সময় আপডেট ও ফুললোডেড। ইসলামকে নিজের মতো করে আপডেট করা সম্ভব না, যদি মনে করি আমার মতো করে লোড করতে চাই, এটা সম্ভব না। ’
তিনি বলেন, কেউ ইসলামকে সেকেলে বলে, নিজের কান-নাক নেই বলে অন্যদের বলে, এটা লজ্জাজনক।
ইসলাম ফোবিয়াদের ভয়-ভীতি যেন অ্যাটাক না করতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
মিডিয়া জগতে হ্যাকিং মারাত্মক সমস্যা বলেও মন্তব্য করেন মুফতি রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, আমার নামে ১০টা ফেসবুক খুলে আপটেড হচ্ছে, মিডিয়া বা যন্ত্রের উপর নির্ভর করা খুবই কঠিন। হ্যাকারদের থেকে দূরে থাকা নিশ্চয়তা থাকবে না, কোনো সার্ভারওয়ালা দিতে পারবে না। তারপরও সব কিছু মিলে মনে করি না, ইতিবাচক নেতিবাচক- সব মিলে ইতিবাচকগুলো খুঁজে বের করে কাজ করে যেতে হবে।
অনলাইন মিডিয়ায় ইসলাম পাতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মাঝরাতে একজন মানুষের মন নরম থাকে, অনলাইনে সার্চ করলে মহানবীর নাম চলে এলে হয়তো ইসলাম গ্রহণ করতে পারে। এজন্য বিষয়টা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
‘যতো প্রচার মাধ্যম আছে, ওলামাদের টেক্সট নিয়ে কোনো দ্বিমত ছিল না, তথ্যমূলক ফটো কল্যাণে প্রচারের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। ইসলামের জন্য কোনো ক্ষতি হবে না, কিছুই করতে পারবো না। ইসলাম জোর করে খাইয়ে দিতে হয়, এমন ঠুনকো নয়। ’
মহানবীর একটি ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, তিনি মানব কল্যাণে এসেছিলেন, জানোয়ারের কাঁধে বসে দুই বন্ধ গল্প করছিল, মহানবীর নির্দেশ ছিল, যদি কথা বলো তাকে ছেড়ে দাও, ঘাস চিবাতে পারে।
বাংলানিউজের ইসলাম বিভাগের প্রধান মুফতি এনায়েতুল্লাহর পরিচালনায় সেমিনারে বিশিষ্ট আলেম-ওলামারা উপস্থিত আছেন।
জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া মোহাম্মদপুর ও কলাম লেখক মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, ইসলামি পত্রিকা পরিষদের সভাপতি ও মাসিক আদর্শ নারী পত্রিকার সম্পাদক মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্দু বিভাগের অধ্যাপক মুফতি ড. গোলাম রব্বানী, মালযেশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল শরিয়া রিসার্স একাডেমির (ইসরা) গবেষণা সহকারী মুফতি ইউসুফ সুলতান সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
আরও ছিলেন বসুন্ধরা ইসলামি রিসার্স সেন্টারের সহকারী মুফতি শরিফুল আজম, মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের রাহাবার ও চেয়ারম্যান হাফেজ মুফতি সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা জহির উদ্দিন বাবর, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির ধর্ম বিভাগের সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব, প্রিয়.কমের প্রিয় ইসলাম বিভাগের বিভাগীয় সম্পাদক মাওলানা মিরাজ রহমান, জামিয়া মাহমুদিয়া মেরাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল ইসলাম ইসহাকি, ইসলামী লেখক ও গবেষক মুফতি মাহফূযুল হক, তরুণ আলেম ও লেখক মাওলানা আতাউর রহমান খসরু, টঙ্গীর জামিয়া নুরিয়া’র মুহাদ্দিস মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মল্লিক, উত্তরার মাওলানা মুফতি ইউসুফ, মাওলানা রশিদুল হক, মাওলানা তানজিল আমির।
বাংলানিউজের কনসালট্যান্ট এডিটর জুয়েল মাজহার ও হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএন/এএ
** চাচার হত্যাকারীকেও ক্ষমা করেছিলেন রাসূল
**মহানবীর চোখে কেউ সংখ্যালঘু নয়
** মহানবীর মধুর ভাষা প্রচারের অপার মাধ্যম ডিজিটাল মিডিয়া
** ‘মহানবী বসে পড়েছিলেন’
** আলেম-ওলামাদের ডিজিটাল মিডিয়ায় আসতে হবে
** বাংলানিউজের ইসলামি সেমিনার শুরু
** ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রিয় নবী (সা.)-এর মূল্যবোধ চর্চা