মানুষের আত্মা পবিত্র করার জন্য বেশি বেশি নামাজ পড়া দরকার। যদিও আত্মা পবিত্র করার আরও অনেক আমল ও মাধ্যম রয়েছে।
এই আয়াতের অালোকে বলা চলে, মানুষের আত্মাকে পবিত্র করতে হলে নামাজের আমল সর্বাগ্রে দরকার। মানুষ মিথ্যা কথা বললে, মন্দ কাজ করলে, মনে হিংসা, বিদ্বেষ, ক্রোধ, অহঙ্কার ইত্যাদি থাকলে, আত্মা কখনও পবিত্র হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আত্মাকে পবিত্র করতে হলে সবাইকে নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে।
কোনো ব্যক্তি যদি মনে করে যে, আমি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নামাজ পড়ি। তাহলে, তার ভালো-মন্দ সব কাজ করার সম্ভাবনা থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। যেমন, যে ব্যক্তি বলবে আমি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নামাজ পড়ি। তার নামাজ পড়ার সময় হলে, সে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নামাজ পড়ল। সে ব্যক্তি নামাজ পড়ার পর, তার যদি মিথ্যা কথা বলা বা মন্দ কাজ করার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার সময় হয়, সে তখন মিথ্যা কথা বলে কিংবা মন্দ কাজ করেও তার লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, আবার নাও থাকতে পারে, কিন্তু সুযোগ একটি থেকে যায়। যেমন, সে তখন মিথ্যা কথা বা মন্দ কাজ করে লাভবান হয়ে, সে মনে মনে বলবে যে, আবার আমি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নামাজ পড়লে, আল্লাহ আমার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে, আমার সব পাপ ক্ষমা করে দিবেন।
এভাবে মানুষের ভালো-মন্দ উভয় কাজ করার সুযোগ থাকে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমার দাসত্বের জন্যই আমি মানুষ এবং জ্বিনকে সৃষ্টি করেছি। ’ -সূরা জারিয়াত: ৫৬
বস্তুত আল্লাহতায়ালা কারও মুখাপেক্ষী নয়, আল্লাহর সৃষ্টির সব বস্তুই আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আল্লাহতায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন, শুধুমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও হুকুম পালন করার জন্য। সব মানুষ আল্লাহর দাস। মানুষ শুধুমাত্র আল্লাহর হুকুম পালন করবে, আল্লাহর ইবাদত করবে।
লেখার শুরুতে বলা হয়েছে, মানুষের আত্মাকে পবিত্র করার জন্য সবাইকে নামাজ পড়তে হবে। নামাজের মাধ্যমে কীভাবে আত্মা পবিত্র থাকবে এর একটি উদাহরণ এমন হতে পারে- কোনো ব্যক্তি আসরের নামাজ পড়ার জন্য অজু করল, সে ব্যক্তি অজু করে আসরের নামাজ পড়ে মনে মনে ভাবল, আমার তো এখনও অজু আছে, আমি এই অজু দিয়ে মাগরিবের নামাজও পড়ব। তাহলে, সাধারণ অভ্যাসবশত ওই ব্যক্তি আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত কোনো মিথ্যা কথা বলা বা মন্দ কাজ করবে না। আবার যদি ব্যক্তিটি মাগরিবের নামাজ পড়ে, আর মনে মনে স্থির করে নেয়- যেহেতু অজু আছে, তাই ইশার নামাজও পড়ব। সেই ব্যক্তি ইশার নামাজ পড়ার পূর্ব পর্যন্ত, মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকবে এবং মন্দ কাজ করা থেকে বিরত থাকবে। সুতরাং এভাবে সে নামাজ পড়তে পড়তে এবং মিথ্যা কথা বলা ও মন্দ কাজ-কর্ম করা থেকে বিরত থাকতে থাকতে, তার আত্মা পবিত্র হয়ে যাবে।
আর যাদের আত্মা একবার পবিত্র হয়ে যায়, তাদের দ্বারা সৎকর্ম করা ব্যতীত মিথ্যা কথা বলা বা মন্দ কাজ-কর্ম করা কখনও সম্ভব নয়। তারা সবসময় আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
এমএ