মুমিন আরবি শব্দ। এটা আরবি ঈমান শব্দ থেকে এসেছে।
মুমিন মুসলিম শব্দের মাঝে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। মুসলিম বলা হয় ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করে এমন ব্যক্তিকে। পক্ষান্তরে মুমিন বলা হয়, ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করার পাশাপাশি তা নিজের ভেতরে ও বাইরে ধারণ করার পাশাপাশি কঠোরভাবে এর নির্দেশাবলী মেনে চলে এমন ব্যক্তিকে। সে হিসেব বলা চলে, সব মুমিন মুসলিম, কিন্তু সব মুসলিম মুমিন নয়।
এমন মুমিনের জন্য বেশ কিছু পালনীয় আমল রয়েছে। যার প্রেক্ষিতে এমন মুমিনের মর্যাদা আরও উচ্চতায় পৌঁছে। মুমিনের পালনীয় কাজগুলো হলো-
আল্লাহর সামনে নত হওয়া
দুনিয়ার অন্য কারও সামনে মাথানত করা যাবে না। মাথানত করতে হবে একমাত্র আল্লাহতায়ালার সামনে। কেবল তাকেই সিজদা করতে হবে। তার সব বিধিবিধান মেনে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
আল্লাহর সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকা
একজন মুমিনের কাজ হলো, সর্বদা মহান আল্লাহতায়ালার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট থাকা। যদি আল্লাহ কারও প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন- তাহলে তার কিছুতে বরকত হবে। ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্যরকম স্বাদ অনুভব করবে।
আল্লাহর প্রতি সমর্পিত হওয়া
মানুষ যতই গোনাহ করুক না কেন- আল্লাহতায়ালার দিকে যদি পরিপূর্ণরূপে সমর্পিত হয়; একনিষ্ঠভাবে তওবা করে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তাহলে আল্লাহতায়ালাও তাকে আপন করে নেবেন। তখন কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ ভরসা করা
সবক্ষেত্রেই আল্লাহতায়ালার ওপর তাওয়াক্কুল তথা পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে। যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও প্রতি ভরসা জন্ম নেয়- তাহলে আল্লাহর আজাব অবধারিত। কোনো রক্ষা নেই।
ধৈর্য-সহনশীলতা
যারা আল্লাহর কাজ করে, তার মনোনীত হতে চায় আল্লাহতায়ালা তাদের অনেকভাবে পরীক্ষা করেন। বিভিন্নভাবে কষ্ট দেবেন। কখনও জানের ক্ষতি, মালের ক্ষতি, ইজ্জত-আবরুর ক্ষতি ইত্যাদি অনেক মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন। নবীরা আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। সেই প্রিয় বান্দাদেরও তিনি পরীক্ষা করেছেন। অলি-আউলিয়া, আলেম কেউই কষ্ট থেকে বাদ যাননি। তবে তাদের জন্য সুসংবাদ হলো, তারা যত বিপদেই পড়ুক না কেন, আল্লাহতায়ালা তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্ত করে আনবেন। তারাই শেষ সময়ে বিজয়ী হবে। কিন্তু শর্ত হলো, সর্বাবস্থায় ধৈর্যধারণ করতে হবে। তাহলেই আল্লাহ কবুল করবেন।
আসলে আল্লাহতায়ালা তার চিরস্থায়ী জান্নাত দেওয়ার আগে বান্দাকে পরীক্ষা করবেন। দরকার নেই, তারপরও আল্লাহ পরীক্ষার ব্যবস্থা রেখেছেন, যেন কেয়ামতের দিন কাউকে উত্তম জান্নাত দেওয়া হলো, আর কাউকে নিম্নমানের দেওয়া হলো তা প্রশ্ন করতে না পারে। কে কত ভালো কাজ করল আর কে কত আনুগত্য করল তার পার্থক্য করা যায়। তাদের মধ্যে সঠিক বিচার হয়। উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া যায়। মূলত সে জন্যই এমন পরীক্ষার ব্যবস্থা।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে সত্যিকারের মুমিন হওয়ার তওফিক দান করুন। অামিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
এমএ/