আয়ারল্যান্ড উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। আধুনিক সার্বভৌম রাষ্ট্রটি আয়ারল্যান্ড দ্বীপের পাঁচ-ষষ্ঠাংশ নিয়ে গঠিত।
আয়ারল্যান্ডে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে গড়ে উঠছে একের পর এক মসজিদ। উত্তর ডাবলিনে নির্মিত হচ্ছে পাঁচ কোটি ডলার ব্যয়ে দেশটির সবচেয়ে বড় মসজিদ।
দেশটির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ইলিউমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্লোনগ্রিফিন সেন্টারে নির্মিতব্য এই মসজিদটিতে একত্রে তিন হাজার লোক নামাজ পড়তে পারবেন। এখানে থাকবে দুটো মিনার, নামাজের স্থান, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, অফিস, লাইব্রেরি, মরচুয়ারি, ৬০০ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন অনুষ্ঠান কেন্দ্র্র, স্কুল, ফিটনেস সেন্টার এবং অ্যাপার্টমেন্ট।
বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে ৫০ হাজারের মতো মুসলমান বসবাস করেন। যা মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশ। তবে মুসলমানদের সংখ্যা ২০২০ সালে এক লাখে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। আয়ারল্যান্ডের প্রত্যেক শহরেই মসজিদ এবং মক্তব রয়েছে। সেখানকার মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরে স্কুলে যেতে পারে। আয়ারল্যান্ডে রয়েছে ইসলামি পোশাকে প্রচুর চাহিদা। কিন্তু সেসব আমদানি করতে হয় বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে।
ইসলামি পোশাকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক শহরে এক বাংলাদেশি প্রথম ইসলামি পোশাকের দোকান খুলেছেন। লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা এবং এনার্জি বিষয়ক একটি রিসার্চ সেন্টারের সহকারী ফয়সাল খানের ওই দোকানটির নাম ‘আল হায়া’। ফয়সাল খান ইসলামি পোশাকের ওই দোকানটি ক্রমবর্ধমান মুসলমানদের ধর্মীয় পোশাকের চাহিদা পূরণ করার জন্য চালু করেছেন।
লিমেরিকে প্রায় দুই হাজারের অধিক মুসলমান রয়েছে এবং এ শহরে মোট ৪টি মসজিদ রয়েছে।
ইসলামি পোশাকের দোকান চালু প্রসঙ্গে ফয়সাল খান বলেছেন, ডাবলিনে অনেক দোকান আছে এবং সেখানে মুসলমানদের জন্য কিছু খাদ্য এবং পোশাকের পাওয়া যায়। তবে সেগুলো মুসলমান দ্বারা পরিচালিত হয় না। এখানে আমাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, উদার ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে ক্রেতাদের জন্য সাশ্রয়ী ও ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রয় করব। আমাদের দোকানের চাহিদাও বেশ।
ক্যাথলিক গির্জার দেশ বলা হয় আয়ারল্যান্ডকে। সেখানে সবচেয়ে দ্রুত বিকাশমান ধর্ম হিসেবে ইতোমধ্যেই ইসলাম জায়গা করে নিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ২০৪৩ সালের মধ্যে প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানদের ছাড়িয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী হবেন মুসলমানরা। বর্তমানে আইরিশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের কাছে পছন্দের গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের মুসলিম ছাত্র সংগঠনগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ‘ইসলামিক অ্যাওয়ারনেস উইক’ পালন করে। আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলমান শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনা কক্ষ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
এমএ