কোরআনে কারিম এক বিস্ময়কর বিষয়। এর বিস্ময় শেষ হবার নয়।
হিন্দি ভাষায় ব্রেইল পদ্ধতি বা বর্ণমালায় কোরআন অনুবাদ করেন, ভারতের বিহার রাজ্যের ‘ঝাড়খণ্ড’ অঞ্চলের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণী ‘নাফিসা। ’
তার এই কীর্তিকে ইতোমধ্যেই মিসরের বিখ্যাত বিদ্যাপীঠ আল আজহারের বিদেশি ভাষাসমূহের উর্দু ইউনিট মনিটরিং সেন্টার নির্ভুল বলে ঘোষণাও করেছে।
নাফিসা ভারতের ঝাড়খণ্ডে বসবাস করেন। শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত নাফিসা পবিত্র কোরআনে কারিমের একজন দক্ষ শিক্ষক হিসেবে নিজ এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছেন।
আল আজহার মনিটরিং কেন্দ্র তাদের মন্তব্য প্রকাশ করতে যেয়ে বলেছে, পবিত্র কোরআনে কারিম শিক্ষার জন্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই ভদ্র মহিলাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। আমরা তার অধ্যবসায় ও প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই।
জন্মের পর থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন। ধীরে ধীরে তার দৃষ্টি কমে যায়। নাফিসা বানারাসে অবস্থিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে দিল্লীর এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা শেষ করেন। বর্তমানে তিনি নিজ এলাকার একটি প্রাইমারি স্কুলে স্বেচ্ছায় তিনি হিন্দি ভাষা শেখাচ্ছেন। সেই সঙ্গে আগ্রহীদের পবিত্র কোরআনে কারিমও শিখিয়ে থাকনে।
কোরআন অনুবাদ প্রসঙ্গে নাফিসা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে খুব ইচ্ছা হতো পবিত্র কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের। কিন্তু দৃষ্টি সমস্যা থাকার ফলে এ স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়নি।
এরপর তিনি হিন্দি ভাষায় অনুদিত কোরআন ব্রেইল বর্ণমালায় লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ব্রেইল বর্ণমালায় হিন্দি ভাষায় এটাই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ অনুদিত কোরআন শরিফ।
তার এ কাজটি শেষ করতে সময় লেগেছে ৩ বছর। ২০০৫ সালে তিনি কোরআন অনুবাদ শুরু করেন, শেষ হয় ২০০৮ সালে। এর পর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ আলেমদের কাছে পাঠানো হয়। সর্বশেষ তা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠালে সেখানকার গবেষণা বিভাগ তার অনুবাদকে নির্ভুল ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
এমএ/