মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মুসলিম দেশ সিরিয়ায় বিগত পাঁচ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হয় ২০১১ সালের মার্চ মাসে৷ কিন্তু সেই প্রতিবাদ এক পর্যায়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়৷ যা এখনও চলমান।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের হিসাবে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। আর ঘর হারিয়ে শরণার্থী হয়েছেন এক কোটিরও বেশি সিরীয় নাগরিক। বিশ্বের বিবেক নাড়ানো সিরিয়ার শরণার্থী শিশু আইলান কুর্দি ছিলো তাদেরই একজন।
মোট কথা, চতুর্মুখী হামলায় চরম সঙ্কটে নিপতিত দেশটি। সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলার পর এখন নতুন করে শুরু হয়েছে রুশ বিমান হামলা। সিরিয়ায় রুশ বিমান হামলা নিয়ে পাশ্চাত্য দেশগুলোর বিস্তর অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এবার সেই অভিযোগের আগুনে ঘি ঢালল একটি খবর।
ইউএসএ টুডের এক খবরে বলা হয়েছে, নানামুখী হামলায় এখন পর্যন্ত ৭৬টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে সিরিয়ায়। বিশেষ করে সিরিয়ায় গত চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা রুশ বিমান হামলায় অন্তত ১৯টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে।
ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা নিয়ে নতুন এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সিরীয় সরকারি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৪৭টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে।
আমেরিকান স্কুল অব অরিয়েন্টাল রিসার্চ (American Schools of Oriental Research) নামের একটি সংস্থার গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
খবরে বলা হয়েছে, আরও অন্তত ১০টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে। এগুলো হয় সিরিয়া অথবা রুশ হামলায়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হামলার ১৭ ভাগই সংঘটিত হয় নামাজের সময়।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সিরিয়ায় বিমান হামলা শুরু করে রাশিয়া।
পাশ্চাত্য দেশগুলোর অভিযোগ, মূলত বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখে নিজের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলই মস্কোর উদ্দেশ্য।
রাশিয়ার হামলায় যেমন আসাদ বিরোধী বিদ্রোহীরা মারা যাচ্ছেন, তেমনি বেসামরিক নাগরিকরাও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
এক কথায়, সিরিয়ার সংঘাত 'নজীরবিহীন স্তরের বিভীষিকায়' পৌঁছেছে। সিরিয়া একটু একটু করে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য আসাদ বিরোধীদের অভিযোগ এ যাবৎ প্রায় দেড় হাজারের বেশি মসজিদ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সংখ্যা যাই হোক মসজিদও রেহাই পাচ্ছে না যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে, শঙ্কার কথা এটাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
এমএ/