তেলেগু ভাষা ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে প্রচলিত ও রাজ্যটির সরকারি ভাষা। এটি সবচেয়ে প্রচলিত দ্রাবিড় ভাষা এবং ভারতে হিন্দি ও বাংলার পর সবচেয়ে বেশি প্রচলিত।
এ ছাড়া তেলেঙ্গানা ও পন্ডিচেরি বা পুদুচেরি অঞ্চলে তেলেগু ভাষার প্রচলন রয়েছে। এ ভাষায় প্রায় ৮ কোটি মানুষ কথা বলেন। ভারতে তৃতীয়তম স্থানীয় ভাষা তেলেগু বিশ্বের ভাষা তালিকায় ১৫ তম স্থানে রয়েছে।
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা হিন্দি ও ইংরেজি। তবে রাজ্য পর্যায়ে প্রায় ২৫টি ভাষা সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃত। রাজ্যগুলো তাদের নিজস্ব সরকারি ভাষা ব্যবহারের অধিকার সংরক্ষণ করেন। ভারতীয় সংবিধান ও আইনে কোথাও জাতীয় ভাষা কথাটি ব্যবহার করা হয় না।
তেলেগু মূলত ভাষাভিত্তিক জনগোষ্ঠি। তেলেগু ভাষীদের মধ্যে রয়েছে মালা, মাদিগা, চাকালি, সাচ্চারি, কাপুলু প্রভৃতি গোত্রের মানুষ। পূর্বে সবাই হিন্দু ধর্মালম্বী হলেও বর্তমানে খ্রিস্টান ধর্মে অনেকে আবার মুসলিম ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছেন।
অন্ধ্র প্রদেশে ৭ শতাংশ মুসলমানের বাস। এ রাজ্যের হায়দ্রাবাদ জেলায় আলোচিত মক্কা মসজিদ অবস্থিত। মসজিদটির মূল ভবনের ইট তৈরির জন্য মাটি আনা হয় সৌদি আরবের মক্কা থেকে। তাই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে- মক্কা মসজিদ। মসজিদটি ভারতের বৃহৎ ও প্রাচীন মসজিদগুলোর অন্যতম।
তেলেঙ্গানা রাজ্যে তুলনামুলকভাবে মুসলমানের সংখ্যা বেশি। তেলেঙ্গানায় প্রায় ৫ হাজার মসজিদ রয়েছে। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) নেতৃত্বাধীন সরকার ওই পাঁচ হাজার মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে প্রতি মাসে এক হাজার রুপি করে সম্মানী প্রদান করেন। ২০১৪ সালের ২ জুন ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে ভাগ হয়ে নতুন রাজ্য হয় তেলেঙ্গানা। সেই থেকে রাজ্যের ক্ষমতায় আছে আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী সংগঠন টিআরএস। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানী প্রদানের বিষয়টি তাদের নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিলো।
এই বৃহৎ অঞ্চলের মুসলমানের সুবিধার্থে এবার ‘তেলেগু’ ভাষায় পবিত্র কোরআনে কারিম অনুবাদ করা হলো। এর আগে তেলেগু ভাষায় কোরআন অনুদিত হলেও সেগুলো ছিলো তুলনামূলকভাবে কঠিন। এবার সহজবোধ্য করে অনুবাদ করা হয়েছে। এ অনুবাদ নিয়ে ভারতের মুসলিম কাউন্সিলের কোনো আপত্তি নেই।
অন্ধ্র প্রদেশের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মুহাম্মদ রাফি মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) তেলেগু ভাষায় কোরআন অনুবাদের খবর জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
অন্ধ্র প্রদেশের বিজয় নগরের গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তেলেগু ভাষায় কোরআন অনুবাদ হওয়ার কারণে তেলেগু ভাষীদের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। পবিত্র কোরআন বিশ্বের সাফল্য ও ভ্রাতৃত্বকে রক্ষা করছে এবং সুন্দর জীবনযাপনের জন্য একটি পরিপূর্ণ গাইড। আমরা এখানকার মানুষের চাহিদার জোগান দিতে পেরে খুশি। অুনদিত কোরআনের চাহিদা প্রচুর। আপাতত শুধু অনুবাদ ছাপা হয়েছে। অচিরেই সংক্ষিপ্ত তাফসিরও প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬
এমএ/