ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

নিউইয়র্কে দাফনের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন মুসলমানরা

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
নিউইয়র্কে দাফনের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন মুসলমানরা

এই ছবিটি নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের যৌথ কবরস্থানের। কবরস্থানের জায়গার অভাবে মুসলমানরা এভাবেই কবর ভাগাভাগি করে চিরবিদায় জানিয়ে থাকেন আপনজনদের।

কারণ, নিউইয়র্ক শহরে প্রায় ১০ লাখ মুসলমান বসবাস করলেও সেখানে মুসলমানদের আলাদা লাশ দাফনের কোনো সুব্যবস্থা নেই।

একক কোনো কবরস্থান না থাকায় খ্রিস্টান ও ইহুদিদের সঙ্গে যৌথ কবরস্থানে লাশ দাফন করতে হয় মুসলমানদের।

এ ছাড়া নিউইয়র্কে লাশ দাফনে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তা অনেক মুসলমান পরিবারের সামর্থ্যরে বাইরে। এ কারণে এ শহরের মুসলমানদের অনেকেই ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘আমাদের মরার জন্যও সামর্থ্যবান হতে হয়। ’

নগরীর ব্রুকলিন এলাকার ডেকালব এভিনিউয়ে পিরো ফিউনারেল হোম নামে একটি কবরস্থান রয়েছে যেখানে ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জন্য আলাদা আলাদা সেকশন রয়েছে। বিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে স্থাপিত এই সমাধিক্ষেত্রে মুসলমানদের সেকশনটির নাম রাখা হয়েছে ইসলামিক ফিউনারেল সার্ভিস। এই বিভাগটির প্রধান তুর্কি বংশোদ্ভূত আমেরিকান আহমদ কারগি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এখানে লাশ দাফনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘(সঙ্কটের কারণে) আমরা প্রায়ই নিউজার্সির স্টেট মেমোরিয়াল পার্কের কবরস্থান ব্যবহার করি। এ ছাড়া লং আইল্যান্ডে একটি ছোট মুসলিম কবর স্থান রয়েছে। তবে এসব জায়গায় লাশ দাফন করতে ৬ থেকে ৮ হাজার মার্কিন ডলার খরচ হয়। শহরের ভেতরে দাফন করতে হলে কখনো ১৪ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ হয়, যা খুবই ব্যয়বহুল। কাজেই আমরা সবচেয়ে সাশ্রয়ী জায়গাটি ব্যবহার করি।

প্রায় এক দশক ধরে নিউইয়র্কে লাশ দাফন কাজের সঙ্গে জড়িত আবু ইবরাহিম (২৮)। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এই যুবক বলেন, ‘মৃত্যু অনিবার্য বাস্তবতা, তাই লাশ দাফন প্রক্রিয়া এত কঠিন ও ব্যয়বহুল হওয়া উচিত নয়। আমাদের নিজস্ব একটি করবস্থান তৈরির জন্য নিউইয়র্কের মুসলমান সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করা উচিত। আমরা অন্যদের সমাধিক্ষেত্রের ওপর নির্ভরশীল, যা অনেক ব্যয়বহুলও। যদি আমাদের নিজস্ব একটি কবরস্থান থাকে তাহলে আমরা এই নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, লাশ দাফন করতে মৃতের স্বজনদের এত অর্থ খরচ করতে হবে না।

নিউইয়র্কের যেসব মুসলিম পরিবার লাশ দাফনে সামর্থ্যবান নয় তাদের সহায়তার জন্য আবু ইবরাহিম ‘জানাজা প্রজেক্ট’ নামের একটি অলাভজনক সংগঠন গড়ে তুলেছেন। এই সংগঠন তহবিল সংগ্রহ করে এসব পরিবারকে লাশ দাফনে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে।

নিউইয়র্কে বিভিন্ন দেশের মুসলমান রয়েছে। তবে দেশ ও সংস্কৃতি আলাদা হলেও ইসলাম ধর্মের ঐতিহ্য অনুযায়ী সবার দাফন পদ্ধতি একই ধরনের। ইসলাম মনে করে, দাফনের কাজে বাহুল্য খরচ অপ্রয়োজনীয়।

-আলজাজিরা অবলম্বনে

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।