ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

আদর্শ মায়েরা সহজে বেহেশতে যাবেন

মাহমুদা নওরিন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৬
আদর্শ মায়েরা সহজে বেহেশতে যাবেন

পৃথিবীর সব সন্তানের কাছে ‘মা’ শব্দটি যেমন সবচেয়ে দৃঢ় সম্পর্কের নাম, তেমনি সবচেয়ে পবিত্র ও মধুরতম শব্দের নাম। সন্তানের জীবনের চরম সংকটকালে পরম সান্ত্বনা ও ভরসার স্থল হিসেবে যার কথা প্রথম মনে পড়ে তিনি মমতাময়ী মা।



একজন আদর্শ মায়ের অভাবে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতি বিপন্ন হতে বাধ্য। সুতরাং মা হিসেবে ইসলামে একজন নারীর অবস্থান বা মর্যাদা অকল্পনীয়। মা সম্পর্কে পবিত্র হাদিসে বলা হয়েছে, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। ’ কম শব্দের এ হাদিসে অত্যন্ত ব্যাপকভাবে বলে দেওয়া হয়েছে মা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি। সুতরাং মায়ের সন্তুষ্টি অর্জন একজন সন্তানের অপরিহার্য দায়িত্ব।

শান্তির ও মানবতার ধর্ম ইসলাম মা’কে দিয়েছে বর্ণনাতীত মর্যাদা ও সম্মান। ইসলামের দৃষ্টিতে বাবার চেয়ে মায়ের মর্যাদা তিন গুণ বেশি। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! মানুষের মাঝে আমার নিকট থেকে সর্বোত্তম সেবা লাভের অধিকার কার? নবী (সা.) বলেন, তোমার মায়ের। লোকটি পুনরায় জানতে চাইলেন, তারপর কার? তিনি বললেন, তোমার মায়ের। লোকটি পুনরায় জানতে চাইলেন, তার পর কার? তিনি বললেন, তোমার মায়ের। লোকটি আবারও জানতে চাইলেন, তারপর কার? তিনি বললেন, তোমার পিতার। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

মায়েরা সাধারণত আদর্শ হন। ইসলাম আদর্শ মা হওয়ার জন্য খুব বেশি কঠিন কোনো শর্ত দেয়নি। বিষয়টি খুব কঠিনও নয়। মায়েরা অনেক কাজই অতিরিক্ত করেন, যা তাদের ইসলাম বাধ্য করেনি। যেমন ধরুন, সন্তানের লালন-পালনের বিষয়টি। আমাদের দেশে মা-ই সন্তানকে দেখভাল করেন বললে ভুল হবে না। ফজরের আগে থেকে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত মা তার সন্তানের জন্য সদা নিয়োজিত। কত কষ্টই না তারা করেন! আর বাবা থাকেন সারা দিন তার দুনিয়ার ব্যস্ততা নিয়ে।

এখন মা যদি চান তার সন্তানকে তার স্বামীর চেয়ে বেশি আদরযত্ন করবেন না; স্বামী যতটুকু সময় দেবেন, তিনিও ততটুকু সময় দেবেন; স্বামী যতটুকু দেখভাল করবেন, তিনিও ততটুকু দেখভাল করবেন। তাহলে তিনি তা করতে পারেন। হক আদায় না করার গুনাহ হবে না। তবে অবশ্যই তাকে সন্তানের প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা কম করার জন্য জবাব দিতে হবে। কিন্তু মায়েরা তার ওপর যেটা হক বা আবশ্যক নয়, তা-ও সন্তানের জন্য করেন।

যদি প্রশ্ন করা হয়, অলি-আউলিয়া ও বুজুর্গরা সহজে জান্নাতে যাবেন, নাকি একজন আদর্শ মা সহজে যাবেন- এর উত্তর কী হবে?

একজন বড় আলেমের কথা ধরুন, ইন্তেকালের পর অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে তাকে। তাকে প্রশ্ন করা হবে নানা প্রসঙ্গে।

কিন্তু একজন মায়ের কথা বলুন- যদি তিনি কেবল আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর ওপর বিশ্বাস রাখেন আর ঠিকমতো কোনো রকম ফরজ নামাজটুকু আদায় করে যেতে পারেন তাহলেই তাদের পরকাল সফল বলা যায়। সামান্য কয়েকটা প্রশ্ন থাকবে তাদের জন্য। সহজেই উতরে যেতে পারবেন ওসব।

সহজে জান্নাতে যাওয়ার জন্য, মাকে তার সফল জীবনের জন্য কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়। পরনিন্দা-গিবত-কুৎসা রটনা থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। কিন্তু কিছু অবুঝ নারীর জন্য অনেক ভালো মায়েরাও ভুল করে বসেন। এ সময়ে তো পাপাচারের জন্য ঘরের বাইরেও যেতে হয় না। হাতের কাছেই শয়তান যথেষ্ট উপকরণ রেখে দিয়েছে। সেই শয়তানের ধোঁকায় না পড়ার জন্য আদর্শ জান্নাতি মায়েদের আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৬
এমএ/

** নারী-পুরুষ একে অন্যের সহযোগী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।