ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

নির্মাণের আগেই রেকর্ড বুকে টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদ

মোঃ নূর আলম, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৬
নির্মাণের আগেই রেকর্ড বুকে টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদ

বিশ্বের মসজিদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে নির্মাণাধীন ২০১ গম্বুজ মসজিদ। নির্মাতাদের দাবী, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজ এবং দ্বিতীয় উচ্চতম মিনারের মসজিদ হতে যাচ্ছে।

নির্মাণাধীন ২০১ গম্বুজ মসজিদটি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। মসজিদটির মিনারের উচ্চতা ৪৫১ ফুট। অর্থাৎ ৫৭ তলা উচ্চতার মিনারটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইটের তৈরি মিনার।

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইটের তৈরি মিনার হলো কুতুব মিনার। যা ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত। উচ্চতা ২৪০ ফুট (৭৩ মিটার)। কুতুব মিনারে সিঁড়ি রয়েছে ৩৭৯টি।

টাঙ্গাইলে নির্মিত মসজিদটি ১৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ মসজিদ কমপ্লেক্স। এখানে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। মেহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও মসজিদে ফ্যান লাগানো হবে সহস্রাধিক।

মসজিদের মিনার ২০১টি থাকলেও মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ এবং চারদিকে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। থাকবে মূল মসজিদের চার কোনায় ১০১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চারটি মিনার। পাশাপশি আরও চারটি মিনার থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

মসজিদের দেয়ালের টাইলসে অংকিত থাকবে পূর্ণ পবিত্র কোরআন শরিফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালে অংকিত কোরআন শরিফ পড়তে পারবেন। মসজিদের প্রধান দরজা নির্মাণে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান দেওয়ার জন্য মসজিদের সবচেয়ে উঁচু মিনারে বানানো হবে আলাদা রুম।

মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বে আলাদা পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে থাকবে দুঃস্থ মহিলাদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা।

পশ্চিমে ঝিনাই নদী থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি করা হবে এবং নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। চারপাশে হবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান। থাকবে হ্যালিপ্যাড।

গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে নির্মিত মসজিদটির নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে।

কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন।

মসজিদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মো. হুমায়ুন কবির জানান, নির্মাণাধীন মসজিদের কাজ ইতোমধ্যেই বেশিরভাগ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ২০১৬ সালের মধ্যে মসজিদের কাজ শেষ হবে এবং ২০১৭ সালের প্রথম দিকে পবিত্র কাবা শরিফের ইমামের উপস্থিতি ও ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যেই নির্মাণাধীন অবস্থায় মসজিদটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য পর্যটক নির্মাণ কাজ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। এলাকার লোকজনের মধ্যেও মসজিদটি নিয়ে দেখা দিয়েছে দারুণ আগ্রহ।

বলা যায়, সব মিলিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করে গিনেস বুকে নাম লেখাতে চলছে ২০১ গম্বুজ মসজিদ। নির্মাতাদের প্রত্যাশা, এ স্থাপনাটি বিশ্বের দরবারে মসজিদের দেশ বাংলাদেশকে নতুন করে তুলে ধরবে এবং এটি পরিদর্শন করতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।