ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

শুধু ক্রিকেট নয়, কোরআন শিক্ষায়ও শ্রেষ্ঠ হতে চায় অস্ট্রেলিয়া

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৬
শুধু ক্রিকেট নয়, কোরআন শিক্ষায়ও শ্রেষ্ঠ হতে চায় অস্ট্রেলিয়া

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে এবার রমজান মাস শুরু হবে। আসন্ন রমজানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে দ্বিতীয়বারের মতো আন্তর্জাতিক হেফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।

শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতসহ সম্পূর্ণ হেফজ, ১৫ পারা হেফজ, ১০ পারা হেফজ এবং ২ পারা হেফজ বিভাগে অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক কোরআন ইনস্টিটিউটের আয়োজনে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে।

১০০ নম্বরের এ প্রতিযোগিতায় শুদ্ধ হেফজের জন্য ৭০, শুদ্ধ তেলাওয়াতের জন্য ২৫ ও সুন্দর কণ্ঠের জন্য ৫ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। আগ্রহী প্রতিযোগীরা ২৪ মে’র মধ্যে নাম নিবন্ধন করতে পারবেন।

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মুসলমানদের মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন হেফজের প্রতি অনুপ্রেরণা জোগানো ও কোরআন শিক্ষা বিস্তারের জন্য এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান অন্যতম আয়োজক মুহাম্মদ নাবেল হাজী।

তিনি আরও বলেন, ক্রিকেট খেলায় অস্ট্রেলিয়া যেমন সেরা হয়ে বিশ্বের দরবারে নাম উজ্জ্বল করেছে, আমরাও চাই কোরআন চর্চাকে ভিন্নভাবে বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করতে। আমার প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ভিন্নভাবে চিত্রিত করা হচ্ছে। তাই আমাদের প্রচেষ্টা হলো, এ অঞ্চলে কোরআন চর্চায় সেরা হওয়া। আমাদের সেই রসদ আছে।

সংস্থাটি অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার ব্যাপারে প্রথম ২০১২ সালে আলোচনা করে এবং ২০১৪ সালে দেশটিতে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মহাদেশ হলেও ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ। রাজধানীর নাম ক্যানবেরা। সিডনি বৃহত্তম শহর।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমলেও প্রভাবশালী এ দেশটিতে অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এখন দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা ছয় লাখের মতো।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম যে মুসলমানরা পদার্পণ করেন তারা ছিলেন ব্যবসায়ী। ইন্দোনেশিয়া থেকে তারা সেখানে ব্যবসার উদ্দেশে যান। তবে আফগান উটের মালিকদের প্রথম সফল কাফেলা করাচি বন্দর থেকে জাহাজে আরোহণ করে ৩১ ডিসেম্বর ১৮৬৫ খিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে। তারাই মূলত অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম একটি ছাপড়া মসজিদ নির্মাণ করেন। ধীরে ধীরে কিছু মসজিদকে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়। এজন্য সেগুলোকে Tin Mosqueও বলা হয়।

১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে অ্যাডিলেডে ও ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে পার্থে নির্মাণ করা হয় মসজিদ। আফগানদের পর জার্মান, তুরস্ক, লেবানন, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান থেকে বহুসংখ্যক মুসলমান অস্ট্রেলিয়ায় অধিবাস গ্রহণ করেছেন।

মুসলমানদের সর্বাধিক অধিবাস নিউ সাউথ ওয়েলসে, দ্বিতীয়ত ভিক্টোরিয়ায়, তৃতীয়ত কুইন্সল্যান্ডে আর চতুর্থ নম্বরে আছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া।

সিডনিতে প্রায় কয়েক লাখ মুসলমানের বসবাস। তাদের মধ্যে লেবানিজরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অস্ট্রেলিয়ার অনেক মসজিদে ঈদের জামাতের সময় স্থান সঙ্কুলান না হলে রাস্তা বন্ধ করে জামাত আদায় করা হয়।

কয়েক বছর আগে কোরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম সংসদ সদস্য এড হোসিচ। তিনি নির্বাচনী প্রচারণার সময় মুসলমান হওয়া তার জন্য একটি গর্বের বিষয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।

সিডনিতে প্রথম মসজিদটি নির্মিত হয় ১৯৬০ সালের দিকে সারি হিলস এলাকায়। তবে সবচেয়ে বড় মসজিদ লাকেম্বা ও অবার্নে। অবার্ন মসজিদের নাম গ্যালিপলি মসজিদ। তুর্কি অভিবাসীরা এটা তৈরি করেছেন। পাঁচ হাজার লোক বসার ব্যবস্থা রয়েছে এতে। লাকেম্বা মসজিদটি লেবাননি মুসলমানেরা তৈরি করে। ওই এলাকায় অনেক বাঙালি মুসলমান বসবাস করেন।

দেশটিতে ৬০টির বেশি নিবন্ধিত দল রয়েছে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম পার্টি নামের ওই রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা দিয়া মোহাম্মদ।

অস্ট্রেলিয়ায় মুসলমানদের আলাদা একটি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। চ্যানেলটির নাম- ওয়ান পাথ নেটওয়ার্ক (One Path Network)।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তাবলিগ জামাতের মিনি ইজতেমাও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।