ফজরের নামাজের ইকামত কিংবা জামাত চলাবস্থায় মসজিদে আগমনকারীর কাছে যদি মনে হয়, সুন্নত নামাজ পড়ে অন্তত ফরজের এক রাকাত পাওয়া যাবে; তাহলে তার জন্য মূল জামাতের কাতার থেকে দূরে বারান্দায় বা খুঁটির আড়ালে ফজরের সুন্নত আদায় করা জায়েয আছে।
কারণ, ফজরের নামাজের সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও হজরত আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত আদায় করে নিতেন।
সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও বারান্দায় বা জামাতের কাতার থেকে দূরে সরে খুঁটির আড়ালে সুন্নত পড়ে নিতে হবে। এ জন্য শর্ত হলো, আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, সুন্নত শেষ করে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যাবে।
কিন্তু কিছু মানুষকে দেখা যায়, কোনো বিবেচনা ছাড়াই সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। কাউকে কাউকে তো এমনও দেখা যায়, দ্বিতীয় রাকাতের সূরা ফাতেহা শেষ হওয়ার পরও সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। অথচ দ্বিতীয় রাকাতে সাধারণত একটু ছোট কেরাত পড়া হয়। ফলে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় না। এটা ঠিক নয়।
জামাত শুরু হওয়ার পর সুন্নত নামাজে দাঁড়ানোর জন্য আগে সময় বিবেচনা করতে হবে- দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যাবে কি না। স্বাভাবিকভাবে যদি অনুমান করা না যায়- প্রথম রাকাত চলছে না দ্বিতীয় রাকাত, তাহলে ঘড়ির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
কারণ, জামাত শুরু হওয়ার সময় দেখে বোঝা সম্ভব- এখন প্রথম রাকাত চলছে না দ্বিতীয় রাকাত।
আর (নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী) যদি ফজরের সুন্নত আদায় করে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে সুন্নত না পড়ে জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সুর্যোদয়ের পর এ সুন্নত আদায় করে নেবে।
উল্লেখ্য যে, জোহরের নামাজের সুন্নতের ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা যায়- অনেকেই সময় বিবেচনা ছাড়াই সুন্নতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়; এটা ঠিক না।
আর জোহরের সুন্নতের বিষয়টি ফজরের সুন্নতের চেয়ে ভিন্ন। এক্ষেত্রে জামাত দাঁড়িয়ে গেলে সুন্নতের নিয়ত করার অবকাশ নেই। এমনকি চার রাকাত সুন্নতের জন্য দাঁড়ানোর পর যদি দেখা যায় জামাত শুরু হয়ে গেছে; তাহলে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং ফরজের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে পূর্বের চার রাকাত সুন্নত পড়ে নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
এমএইউ/