ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

যাদের সঙ্গে উঠাবসা সম্মানহানির কারণ

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
যাদের সঙ্গে উঠাবসা সম্মানহানির কারণ কৃপণ ব্যক্তিদের সঙ্গে উঠাবসা মানুষের লাঞ্ছনা ও অপমানের কারণ। তাই কৃপণদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিৎ

শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম প্রদত্ত দিকনির্দেশনা মোতাবেক মানুষের চলাফেরা ও উঠাবসা করা দরকার। আরও দরকার এক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা। অর্থাৎ জীবন চলার ক্ষেত্রে এমন কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে না তোলা- যাতে তার চারিত্রিক নেতিবাচক দিকগুলো নিজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে বা করতে পারে।

কৃপণতা হচ্ছে মানবজীবনের এক জঘন্যতম ও বর্জনীয় বৈশিষ্ট্য। ইসলাম এই নেতিবাচক ও ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্যকে শুধু পরিহার করার কথা বলেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বরং এটা থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।

কেননা কৃপণতার কারণে মানুষ নানাবিধ অপছন্দনীয় ও নিন্দনীয় কর্মে লিপ্ত হয়। যা ইসলামের শিক্ষার পরিপন্থী।  

পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে কৃপণতা পরিহারের আদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, যারা কৃপণতা করে এবং যে ধনসম্পদ আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের দান করেছেন তা গোপন করে- তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।  

অভিজ্ঞ ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, কৃপণ ব্যক্তিদের সঙ্গে উঠাবসা মানুষের লাঞ্ছনা ও অপমানের কারণ। তাই কৃপণদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিৎ।

পবিত্র কোরআনে মুমিন চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বলা হয়েছে, ‘তারা যখন ব্যয় করে তখন অযথা ব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না বরং উভয় প্রান্তিকের মাঝামাঝি তাদের ব্যয় ভারসাম্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। ’ 

অর্থাৎ তাদের অবস্থা এমন নয় যে, আরাম-আয়েশ, বিলাসীতা, মদ-জুয়া, ইয়ার-বন্ধু, মেলা-পার্বণ ও বিয়ে-শাদীর পেছনে অনেক পয়সা খরচ করছে। নিজের সামর্থ্যরে চেয়ে অনেক বেশি করে নিজেকে দেখানোর জন্য খাবার-দাবার, পোশাক-পরিচ্ছদ, বাড়ি-গাড়ি, সাজগোজ ইত্যাদির পেছনে নিজের টাকা-পয়সা ছড়িয়ে চলছে। আবার তারা একজন অর্থলোভীর মতো নয় যে, এক একটা পয়সা গুনে গুনে রাখে। এমন অবস্থাও তাদের নয় যে, নিজেও খায় না, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের ছেলেমেয়ে ও পরিবারের লোকজনদের প্রয়োজনও পূর্ণ করে না এবং প্রাণ খুলে কোনো ভালো কাজে কিছু ব্যয়ও করে না।

প্রাচীন আরবে অধিক অপব্যয়ী ও কৃপণ স্বভাবের প্রচুর মানুষ পাওয়া যেত। এক দিকে ছিল একদল লোক যারা প্রাণখুলে খরচ করত। কিন্তু প্রত্যেকটি খরচের উদ্দেশ্য হতো ব্যক্তিগত বিলাসিতা ও আরাম আয়েশ অথবা গোষ্ঠীর মধ্যে নিজেকে উঁচু মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত রাখা এবং নিজের দানশীলতা ও ধনাঢ্যতার ডংকা বাজানো। অন্যদিকে ছিল সর্বজন পরিচিত কৃপণের দল।  

ভারসাম্যপূর্ণ নীতি খুব কম লোকের মধ্যে পাওয়া যেত। আর এ রকম লোকদের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগণ্য ছিলেন নবী করিম (সা.) ও তার সাহাবিরা।  

এ সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘নিজের অর্থনৈতিক বিষয়াদিতে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা মানুষের ফকিহ (জ্ঞানবান) হওয়ার অন্যতম আলামত। ’ -আহমদ ও তাবারানি, বর্ণকারী আবুদ দারদা

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।