ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ঈমানের শোভা বৃদ্ধিতে করণীয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
ঈমানের শোভা বৃদ্ধিতে করণীয় যেসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশ করে বলে প্রকাশ পায়- সেগুলোর সমষ্টির নাম ইসলাম

যেসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর দাসত্ব বা আনুগত্য প্রকাশ করে, অন্য কথায় যেসব কাজ করলে মানুষ আল্লাহ ও রাসূলের কথা গ্রহণ করেছে বলে প্রকাশ পায়- সেগুলোর সমষ্টির নাম ইসলাম ধর্ম। 

ইসলামের তিনটি অংশ রয়েছে। এক. ঈমান বা বিশ্বাসগত অংশ।

যেমন- আল্লাহতে বিশ্বাস, রাসূলে বিশ্বাস, ঐশীগ্রন্থে বিশ্বাস, পরকালে বিশ্বাস, নবীগণের মুজেযায় বিশ্বাস ইত্যাদি।  

দুই. আমলি বা কার্যগত অংশ। যেমন- নামাজ কায়েম করা, রোজা রাখা, হজ পালন করা, জাকাত আদায়া করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, পবিত্রতা অর্জন করা, হালাল খাওয়া, হারাম থেকে বেঁচে থাকা, ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা ও অন্যায়ের মূলোৎপাটন করা প্রভৃতি যাবতীয় ব্যক্তিগত ও সামাজিক সৎকাজ।

তিন. ইহসান বা আমলে একাগ্রতাগত অংশ। আকায়েদ, ইবাদত, মুআমালা, মুআশারা ও আখলাক- এই পাঁচটির সমন্বিত রূপকেও ইসলাম বলা হয়। যেভাবেই বলা হোক না কেন ‘ঈমান-আকিদা’ই ইসলামের সর্বপ্রথম ও পূর্বশর্ত।

ইমাম গাজালি (রহ.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে তার বান্দাদের কাছে যা কিছু পৌঁছিয়েছেন- তাতে বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করা এবং তাকে এ ব্যাপারে সত্যবাদী বলে মেনে নেওয়াই ঈমান। তাছাড়া একত্ববাদে বিশ্বাস, ফেরেশতা, আসমানি কিতাবসমূহ, নবি-রাসূলগণ এবং পরকাল ও তাকদিরে বিশ্বাস স্থাপনও ঈমানের প্রধানতম অনুষঙ্গ। এক কথায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক আনীত সমস্ত বিধি-বিধান ও রাসূল হিসেবে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার নাম ঈমান।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশি। আর লজ্জাশীলতা ঈমানের অন্যতম শাখা। -সহিহ মুসলিম: ৫৭

কাণ্ড একটি গাছের মূলভিত্তি হলেও গাছটির সৌন্দর্য নির্ভর করে সেটির শাখা-প্রশাখার ওপর। এমনকি ফলনও। একটি গাছের পত্র-পল্লব, ডাল-পালা বা শাখা-প্রশাখা যত বেশি হবে সেটির শোভা ততই বৃদ্ধি পাবে। সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে তার ফলের পরিমাণও। পক্ষান্তরে ডাল-পালাবিহীন একটি গাছ জীবিত থাকলেও সেটির কোনো শোভাই অবশিষ্ট থাকে না। থাকে না ফলের বাহার। এক পর্যায়ে হয়তো গাছের জীবনটাই হুমকির মুখে পতিত হয়।

হাদিসে ঈমানের চমৎকার সব গুণগুলোকে তুলনা করা হয়েছে ডাল-পালা বা শাখা-প্রশাখার সঙ্গে। আর মূল ঈমানকে উপমা দেওয়া হয়েছে মূল গাছের সঙ্গে। যদি ওইসব গুণাগুণ বৃদ্ধি পায় তাহলে ঈমানের শোভা বাড়বে। সঙ্গে বাড়বে ঈমানের ফল। পক্ষান্তরে যদি ঈমানের গুণাগুণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকে, তাহলে ঈমানই এক সময় হুমকির সম্মুখীন হয়ে যায়। তাই ঈমানকে অক্ষুণ্ন রেখে উত্তরোত্তর এর শোভা বৃদ্ধি করতে ঈমান সংশ্লিষ্ট গুণগুলো ব্যক্তির মধ্যে ধারণের বিকল্প নেই।

এ জন্য ঈমানের গুণে নিজেকে সাজিয়েছেন এমন মানুষের সাহচার্য অবলম্বন করা কর্তব্য। কথায় আছে-  সঙ্গগুণে রঙ্গ ধরে।

লেখক: ইমাম ও মুহাদ্দিস

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।