ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

অন্তরের অভাব মুক্তিই প্রকৃত ধন-সম্পদ

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
অন্তরের অভাব মুক্তিই প্রকৃত ধন-সম্পদ অন্তরের অভাব মুক্তিই প্রকৃত ধন-সম্পদ

আল্লাহতায়ালা বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করে মানবজাতিকে সৃষ্টি করে পৃথিবীর ওপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা দিয়েছেন এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য হালাল ও পবিত্র বস্তু সামগ্রী প্রদান করেছেন।

সেই সঙ্গে তিনিই কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম তা বিস্তারিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি মানুষকে সৎপথে চলার দিশা দেওয়ার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন যাতে মানুষ হেদায়েত লাভ করতে পারে, পার্থিব জীবনকে আখেরাতের জীবনের জন্য প্রস্তুত করতে পারে এবং আখেরাতের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভের জন্য যথাযথ পাথেয় সংগ্রহ করতে পারে।

বস্তুত পার্থিব জীবনটা হচ্ছে, ‘কর্মের জন্য, আমল করার জন্য। ’ সেই কর্মগুলো হতে হবে সৎকর্ম। শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রচুর ধন-সম্পদ থাকলেই অভাবমুক্ত হওয়া যায় না। অন্তরের অভাব মুক্তিই প্রকৃত ধন-সম্পদ। -সহিহ মুসলিম শরিফ

ঐশ্বর্যের এই ধারণা ধারণ করে চলতে পারলে পার্থিব জীবনটা ভালোয় ভালোয় অতিবাহিত করা যায়। ইসলাম মনে করে, অল্পে তুষ্টির মধ্যেই প্রকৃত সুখ নিহিত।  

সৎকর্ম পার্থিব জীবনে যেমন কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি তা আখেরাতের জীবনেও অধিকতর কল্যাণকর। পার্থিব জীবন তো ক্ষণিকের। অথচ দুনিয়ার মানুষ এই ক্ষণিক জীবন নিয়ে এমন ব্যতিব্যস্ত থাকেন যে, মনে হয় তার মৃত্যু হবে না, আখেরাতের স্থায়ী জীবনে যেতে হবে না।

দেখুন, প্রতিদিন কত মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে- সে সব দেখেও আমাদের টনক নড়ে না। এই জীবনের পরেও যে আরেক জীবন আছে, সেই জীবনের সুখ-দুঃখ নির্ভর করছে এই জীবনের কর্মের ওপর সেটা যেন মানুষ বেমালুম ভুলে আছে।  

পার্থিব জীবনের এমন বাস্তবতায় আমাদের সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে, জীবনটাকে বুঝতে হবে। কোনোভাবেই দুনিয়ার জীবনকে চূড়ান্ত জীবন মনে করা যাবে না।  

অন্যদিকে পার্থিব জীবনের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে সংসার বিরাগীও হওয়া চলবে না। মূলতঃ আল্লাহতায়ালা আমাদের কি জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে আগমনের উদ্দেশ্যই বা কি সেটা বুঝতে হবে, সেই অনুযায়ী আমল করতে হবে।  

আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তার প্রতিনিধি বানিয়ে। সেই সঙ্গে দিয়েছেন নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্বও। সেই দায়িত্বের অধীনে তিনি পার্থিব জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান দিয়েছেন, ইবাদত-বন্দেগি করতে বলেছেন, সৎকর্ম করতে বলেছেন, মানব কল্যাণের দিশা দিয়েছেন।  

আল্লাহর হকুম পালনের পাশাপাশি, মানুষের বিভিন্ন অধিকার পূর্ণ করতে বলেছেন। স্বামী-স্ত্রীর হক আদায় করতে বলেছেন, নারীদের মর্যাদা দান করেছেন, সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর হক আদায় করতে বলেছেন, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে বলেছেন। তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন দোয়া করতে, আর দোয়া-মোনাজাতে বলতে বলেছেন, ‘হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পার্থিব কল্যাণ দিন ও আখেরাতের কল্যাণ দিন। ’ যে কল্যাণ প্রত্যাশী বিশ্বের আপামর মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।