২০০৯ সালের জুলাইয়ের বিবরণ অনুযায়ী লেবাননের মোট জনসংখ্যা ৪,০১৭,০৯৫ জন। স্থায়ী নাগরিক ছাড়াও ৪ লাখের মতো উদ্বাস্তু রয়েছে।
পরিসংখ্যান মোতাবেক লেবাননে সুন্নি মুসলমান ২৮ শতাংশ। শিয়া মুসলমানও প্রায় ২৮ শতাংশ। ম্যারোনেইট খ্রিস্টান ২২ শতাংশ। গ্রিক অর্থোডক্স ৮ শতাংশ। দ্রুজ ৫ শতাংশ ও গ্রিক ক্যাথলিক রয়েছে ৪ শতাংশ। খ্রিস্টানদের সংখ্যা মুসলমানদের চেয়েও বেশি ছিল। কিন্তু তারা বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়ায় মুসলমানদের চেয়ে তাদের সংখ্যা কমে এসেছে।
১৮টি ধর্মীয় গোষ্ঠী লেবাননে বিরাজমান। প্রত্যেকে স্বকীয়তার সঙ্গে নিজ ধর্মের রীতিনীতি ও উৎসব পালন করে। এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের লোকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় না। সবার মধ্যে রয়েছে বিস্ময়জাগানিয়া ধর্মীয় সমঝোতা। কারণ, সেখানে পারস্পরিক সম্প্রীতি বেশ জোরদার। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই।
লেবানন সরকারের সর্বোচ্চ পদগুলো ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতাদের জন্য আনুপাতিক হারে নির্ধারিত। ধর্ম ও গোষ্ঠীগতভাবে বিভক্ত হয়েও ধর্মীয় সম্প্রীতি টিকিয়ে রাখতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লেবাননে খ্রিস্টান, সুন্নি ও শিয়া মুসলমানরা একত্রে বাস করে।
লেবাননে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ব্যাপারে ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক চুক্তি করে নিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন একজন ম্যারোনীয় খ্রিস্টান। প্রধানমন্ত্রী হবেন সুন্নি মুসলমান ও স্পিকার হবেন শিয়া মুসলমান। সংসদের আসনগুলোও অর্ধেক করে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত। দেশের সংসদ চার বছরের জন্য নির্বাচিত হয়। দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে সংসদ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে। প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেন। সবকিছু মিলিয়ে এখানে প্রতিটি গোষ্ঠী বা দল তাদের কার্যক্রম পরিচালনা ও অধিকার সমানভাবে পেয়ে থাকে। লেবাননে উৎসব হিসেবে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের উৎসবে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। ছুটির দিনগুলোও নির্ধারিত হয় সেই অনুসারে।
লেবাননের বিচার ব্যবস্থা বৈচিত্র্যময়। ওসমানি আইন, নেপোলিয়ান কোড, গির্জার আইন ও বেসামরিক আইনের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে, সে দেশের বিচার ব্যবস্থা। এছাড়া সেখানে ধর্মীয় আদালতও রয়েছে। সব ধর্মের নিজস্ব আইন অনুযায়ী বিয়ে, উত্তরাধিকার ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিচার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৮
আরএ