ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ইবাদত কবুলে যেসব শর্ত

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
ইবাদত কবুলে যেসব শর্ত ছবি : প্রতীকী

ইবাদত-বন্দেগি ও নেক আমলের সময় ইবাদত কবুলের শর্তগুলো অবশ্যই খেয়াল করা চাই। যদি কোনো একটি শর্ত অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তাহলে ইবাদত কবুল হয় না।

ইবাদত কবুলের শর্তগুলো হলো :

নিয়ত শুদ্ধ করা
ইবাদতে মগ্ন হওয়ার আগে নিয়ত শুদ্ধ করতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন কিয়ামতের দিন হবে, আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের বিচারের উদ্দেশে আবির্ভূত হবেন।

তখন প্রতিটি জাতি ভয়ে নতজানু হয়ে পড়বে। বান্দাদের মধ্যে প্রথমে ডাকা হবে কোরআনের বাহক, আল্লাহর পথে শহীদ ও সম্পদশালী ব্যক্তিকে। ক্বারীর উদ্দেশে আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাকে তা শিখায়নি, যা আমার রাসূলের ওপর নাজিল করেছিলাম? বলবে, জি, হে আমার রব! অল্লাহ তাআলা বলবেন, সুতরাং তুমি যা শিখেছো তা কী আমল করেছো? সে বলবে, আমি দিন-রাতের নানা প্রহরে নামাজে কোরআন তিলাওয়াত করেছি। অল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। ফেরেশতারাও তার উদ্দেশে বলবে, তুমি মিথ্যা বলেছো। তাকে লক্ষ্য করে অল্লাহ বলবেন, বরং তোমার অভিপ্রায় ছিল লোকেরা তোমাকে ক্বারী বলে ডাকবে। আর তা তো তোমাকে বলা হয়েছেই। ফলে তুমি দুনিয়াতেই তোমার প্রতিদান পেয়ে গেছো। তুমি দুনিয়াতেই তোমার প্রতিদান পেয়ে গেছো। ’ (হাদিসের পরের অংশে রয়েছে, এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৩৮৬)

সুন্নত পদ্ধতিতে ইবাদত করা
আমল কবুল হওয়ার জন্য রাসুল (সা.) এর অনুকরণ ও অনুসরণ প্রয়োজন। কোনো ব্যক্তির মনগড়া বা বিদআতি পদ্ধতিতে ইবাদত করলে তা কবুল হয় না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো বিধান তালাশ করে, কষ্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং পরকালেও সে হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)

এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে এমন ইবাদাত করল যাতে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই, তা পরিত্যাজ্য হিসাবে গণ্য হবে। ’ (মুসলিম, হাদিস নং : ৪৫৯০)

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এবং রাসুল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও। ’ (সুরা হাশর, আয়াত :০৭)

শিরক মুক্ত থাকা
শিরক সকল ভাল আমল নষ্ট করে দেয়। কোন প্রকার শিরকের সাথে সম্পৃক্ত থাকা যাবে না। শিরকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আমল কবুল হয় না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার আমল নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। ” (সূরা জুমার, আয়াত : ৬৫)

হালাল উপার্জন করা
আমল কবুল হওয়ার জন্য হালাল উপার্জন শর্ত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা পবিত্র। তিনি শুধু পবিত্র বস্তুই গ্রহণ করেন। তিনি মুমিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ তিনি দিয়েছিলেন রাসুলগণের। ’

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা পবিত্র বস্তু-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুজি হিসেবে দান করেছি। ’ অতঃপর রাসুল (সা.) এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলি-ধুসরিত ক্লান্ত-শ্রান্ত বদনে আকাশের দিকে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করে ডাকছে : হে আমার প্রভু, হে আমার প্রভু অথচ সে যা খায় তা হারাম, যা পান করে তা হারাম, যা পরিধান করে তা হারাম এবং হারামের দ্বারা সে পুষ্টি অর্জন করে। বোলো তার প্রার্থনা কিভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম, হাদিস নং : ২৩৯৩)

আল্লাহ তাআলা আমলগুলো কবুলন করে নিন। আমাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দিন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
এমএমইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।